পুবের কলম ডেস্ক : চিকেন বা পোল্ট্রি মুরগির ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের কাটরা কোটোয়ালির ফকরুদ্দিন। ২০১৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির কথা। উত্তরপ্রদেশেরই সোনভদ্রে এক গাড়ি চিকেন সরবরাহ করে ফেরে ফকরুদ্দিন। ফেরার পরই বারিয়াটোলায় এক বিয়েবাড়িতে ফের চিকেন দিয়ে আসতে বলে মালিক।গাড়ি ঘুরিয়ে চিকেন নিয়ে ফের যেতে হয় বারিয়াটোলায়।সেখান থেকে রাতে বাড়ি ফিরেই ফকরুদ্দিন অবাক হয়ে দেখে এনআইএ–র গোয়েন্দারা তাকে গ্রেফতারের জন্য অপেক্ষা করছে।তাকে কোনওরকম প্রশ্ন করতে না দিয়েই এনআইএ–র গোয়েন্দারা ফকরুদ্দিনকে তাদের হেফাজতে নিয়ে নেয়।ফকরুদ্দিনের পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়, পাটনায় গান্ধি ময়দানে নরেন্দ্র মোদির ‘হুঙ্কার র্যা লি’তে বিস্ফোরণ ঘটানোর দায়ে তাকে গ্রেফতার করা হল। কোথায় মির্জাপুর, কোথায় পাটনা!২৭ বছরের যে যুবক দিনভর চিকেনভর্তি গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফিরল সে কীভাবে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকবে?পরিবারের এবং প্রতিবেশীদের এমন প্রশ্নের জবাব মেলেনি কোথাও।সেদিনই ফকরুদ্দিনের প্রথম কন্যাসন্তানের জন্ম হয়েছিল।তার মুখই দেখতে পারেনি সে। এরপর তাকে বিহারের জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।৭ বছরের বেশি সময় ধরে অআদালত এবং জেল ঘুরে শেষপর্যন্ত গত ২৭ অক্টোবর এনআইএ আদালত প্রমাণাভাবে ফকরুদ্দিনকে বেকসুর মুক্তি দিয়েছে। এই ৭ বছরে ফকরুদ্দিনের পাশে ছিলেন জমিয়তে–উল–হিন্দ এর আইনজীবী সঈদ ইমরান গনি। মোট ১০ জনকে অভিযুক্ত করেছিল এনআইএ।আদালত তাদের মধ্যে ৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে, বাকিদের কারাবাসের আদেশ দিয়েছে। নির্দোষ হিসেবে মুক্তি পেয়েছে একমাত্র ফকরুদ্দিন।
বাড়ি ফিরে সাত বছরের কন্যাকে দেখে পুলকিত ফকরুদ্দিন। জায়নাব প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। ফকরুদ্দিনের আক্ষেপ, ‘ঝুটমুট জীবন থেকে ৭টি বছর কেড়ে নিল এনআইএ’।এখন তার বয়স ৩৪। সে আবার চিকেনের ভ্যান চালানোর চাকরিটা ফিরে পেতে চায়।এখন ফকরুদ্দিন বাবাকে সাহায্য করতে চায়। তাঁর আইনজীবী গনি বলেছেন, ‘ফকরুদ্দিনকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে কত ক্ষতিপূরণ দেয় দেখি। নয়তো আইনের লড়াই চলবে।ওর সামাজিক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে’।