পুবের কলম ডেস্ক : গত ২০ বছরে সারা দেশে পুলিশি হেফাজতে ১,৮৮৮টি মৃত্যুর তথ্য উঠে এসেছে৷ পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে ৮৯৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ৩৫৮ জনকে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে মাত্র ২৬ জন পুলিশকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, জানা যাচ্ছে সরকারি রেকর্ড থেকে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর বার্ষিক ক্রাইম ইন ইন্ডিয়া (সিআইআই) ২০০১-২০২০ রিপোর্ট থেকে এমনটা জানা যাচ্ছে৷ গত সপ্তাহে উত্তর প্রদেশের কাসগঞ্জে ২২ বছর বয়সি আলতাফের হেফাজতে মৃত্যুর পর এই তথ্য তাৎপর্যপূর্ণ। একটি হিন্দু পরিবারের নাবালিকা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তাকে আটক করা হয়েছিল। পুলিশের দাবি, হেফাজতে থাকাকালীন বাথরুমে সে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে৷
এনসিআরবি ডেটায় দেখা যাচ্ছে যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১১জন পুলিশকে হেফাজতে মৃত্যুর জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল ২০০৬ সালে৷ তখন ইউপিতে সাতজন এবং মধ্যপ্রদেশে চারজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে ৭৬টি হেফাজতে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে৷ গুজরাতে সর্বোচ্চ ১৫টি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তালিকার অন্যান্য রাজ্যগুলি হল অন্ধ্রপ্রদেশ, অসম, বিহার, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা, কর্ণাটক, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, পঞ্জাব, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা এবং পশ্চিমবঙ্গ। ২০১৭ সাল থেকে এনসিআরবি হেফাজতে মৃত্যু মামলায় গ্রেফতার হওয়া পুলিশ সদস্যদের তথ্য প্রকাশ করছে। গত চার বছরে, হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ৯৬ জন পুলিশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এনসিআরবি পুলিশ হেফাজতে/লকআপে মৃত্যুকে দুটি বিভাগে শ্রেণীবদ্ধ করেছে: রিমান্ডে থাকা অবস্থায় এবং রিমান্ডে না থাকা অবস্থায়। প্রথম ক্যাটাগরিতে রয়েছে যারা গ্রেফতার হয়েছে কিন্তু এখনও আদালতে হাজির করা হয়নি৷ দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে পুলিশ অথবা জুডিশিয়াল রিমান্ডে থাকা ব্যক্তিদের তালিকা করা হয়েছে৷ ব্যুরোর তথ্য বলছে যে ২০০১ সাল থেকে ‘রিমান্ডে থাকা ব্যক্তি’ বিভাগে ১১৮৫টি হেফাজতে মৃত্যু এবং ৭০৩টি মৃত্যু ‘রিমান্ডে না থাকা’ বিভাগে রিপোর্ট করা হয়েছে।
একজন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার প্রকাশ সিং, যিনি ইউপি এবং অসমে ডিজিপি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন, বলেন যে পুলিশের কাজের ত্রুটিগুলি স্বীকার করতে হবে এবং সংশোধন করতে হবে৷ পুলিশরা এসব মামলা সঠিকভাবে তদন্ত করে না। তারা তাদের সহকর্মীদের রক্ষা করার চেষ্টা করে, যা অবশ্যই ভুল। যখন একজন ব্যক্তি হেফাজতে মারা যায়, তখন দায়ী ব্যক্তিকে জবাবদিহি করতে হবে এবং পুলিশকে নিশ্চিত করতে হবে যে তাকে যথাযথ শাস্তি দেওয়া হবে৷ কিন্তু যা গুরুত্বপূর্ণ তা হল যে পুলিশ থার্ড-ডিগ্রি পদ্ধতি ব্যবহার করে হেফাজতে থাকা ব্যক্তির উপর নির্যাতন চালায়। এটি একটি ভুল অভ্যাস৷