পুবের কলম ডেস্ক : সাম্প্রদায়িক হিংসার জন্য ত্রিপুরার বিজেপি সরকারকে শুক্রবার দোষারোপ করলেন জমিয়েত উলেমায়ে হিন্দের (জেইউএইচ) সভাপতি আরশাদ মাদানি। পাশাপাশি তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় হল এখনও পর্যন্ত দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এদিনই জমিয়েতের একটি প্রতিনিধিদল ত্রিপুরা ঘুরে এসে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। আরশাদ মাদানি আরও বলেন, ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তের যোগ রয়েছে কিন্তু এই রাজ্য কখনই শান্তিপূর্ণ থাকেনি। যাইহোক, এক বিশেষ মতাদর্শের একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসার পর বিভাজনমূলক নীতি নেওয়া হয়েছে এবং তাদের সংগঠনকে হিংসাত্মক কাজে অনেক স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। জমিয়েতের রিপোর্ট মোতাবেক, যে নৃশংসতা ও বর্বরতা চালানো হয়েছে ত্রিপুরাতে তা থেকে স্পষ্টত প্রমাণ হয় যে কতদূর পর্যন্ত বিদ্বেষ ও বিভাজনের বিষ মানুষের হৃদয়ে ছড়িয়ে গিয়েছে।
মাদানি জানিয়েছেন যে, উন্মত্ত জনতা ১২টি মসজিদ আক্রমণ করেছে এবং অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ক্ষতি করা হয়েছে মুসলিমদের ধর্মস্থান, দোকান ও অন্যান্য সম্পত্তি। তিনি মন্তব্য করেন, ত্রিপুরার দাঙ্গার দেশের ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করেছে। ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে যদি এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটতে থাকে তাহলে নাগরিকরা সমানাধিকার কোথায় গিয়ে ভোগ করবে। এমন নির্মম ঘটনার পরও রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এটাই আইনের শাসন ও সেই সঙ্গে বিচারব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়। এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
জমিয়েত উলেমায়ে হিন্দ বলে, মিছিল চলাকালে জনতা ধর্মীয় স্লোগান দেয় ও মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় মসজিদ ও দোকান জ্বালিয়ে দেয়। এটা লজ্জার। পুলিশ ও প্রশাসন নীরব দর্শক হয়ে পুরো ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে। কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। মাদানি বলেন, বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় এই হিংসার ঘটনা ঘটেছে–এমনটা বলা হচ্ছে। কিন্তু বিদেশের মাটিতে যদি কিছু ঘটে তাহলে নিজের দেশের মানুষদের উপর প্রতিশোধ নেওয়া কি ঠিক? বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর আক্রমণের তীব্র নিন্দা করে মাদানি বলেন, কোনও সভ্য সমাজে এমনটা ঘটা উচিত নয়। ত্রিপুরায় মুসলিমদের বিরুদ্ধে হিংসাকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করে জমিয়েত উলেমায়ে হিন্দের দাবি, রাজ্য সরকার নিগৃহীতদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করুক এবং দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ নিক। যদি এই চক্রীদের আড়াল করা হয় তাহলে তারা আরও সাহস পাবে ও দেশের আইন-শৃঙ্খলার জন্য বিপদ হয়ে উঠবে।