পুবের কলম ডেস্ক : রাস্তাঘাটে নামায পড়া নিয়ে বেশকিছু জায়গায় বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছে একশ্রেণির মানুষ৷ কেন একটি পার্কে নামায পড়লে বিতর্ক হচ্ছে? কিন্তু একই পার্কে দীর্ঘ সময় ধরে গোবর্ধন পুজো করলে কিছু হচ্ছে না৷ গুরুগ্রাম প্রশাসন এই সপ্তাহে ১৬টি পাবলিক স্পেসে মুসলমানদের জুমার নামায পড়ার অনুমতি প্রত্যাহার করেছে৷ প্রশাসন অবশ্য একটি গ্রুপকে অনুমতি দিয়েছে, যারা গুরগাঁওয়ে শুক্রবারের নামাযে আপত্তি জানিয়েছিল। শুক্রবার একটি পার্কে গোবর্ধন পুজো করার অনুমতি দেওয়া হয় যেখানে মুসলমানরা এক ঘন্টা বা তারও বেশি সময় ধরে শুক্রবারে প্রার্থনা করত৷ এই দুই ধরনের বৈসাদৃশ্য কেন?
একটি ওয়েব আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. তসলিম রহমানি এবং দিল্লি হাইকোর্টের আইনজীবী শহীদ আলি দাবি করেন যে সরকারকে রাজধানীতে ৭৮টি মসজিদ পুনরায় খোলার অনুমতি দেওয়া উচিত যাতে মুসলমানরা সেখানে জুমার নামায পড়তে পারে। একদিকে সরকার মসজিদ বন্ধ করে দিচ্ছে এবং ওয়াকফ জমি দখল করছে৷ অন্যদিকে তারা মুসলমানদের খোলা জায়গায় নামায পড়তে বাধা দিচ্ছে, এমনই অভিযোগ করেছেন ড. রহমানি। তিনি দাবি করেন যে দিল্লির খিরকি মসজিদ, যেখানে হাজার হাজার মানুষ জুমার নামাযের জন্য জমায়েত হয়েছিল, প্রশাসন তা বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, মুসলমানদেরকে দেশে ১৬ হাজার বিঘা ওয়াকফ জমি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, যা মসজিদ, কবরস্থান, মাদ্রাসা এবং ইমামবাড়াকে ঘিরে রয়েছে। একদিকে মুসলমানদের মসজিদ-মাদ্রাসায় প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, অন্যদিকে প্রশাসন তাদের জুমার নামায পড়ার অধিকার সীমিত করছে। জাতীয় রাজধানী অঞ্চলে (এনসিআর) ফরিদাবাদ, গুরগাঁও এবং নয়ডার শিল্প ইউনিটগুলিতে কমপক্ষে এক মিলিয়ন মুসলমান কাজ করতে যাচ্ছেন। যদি প্রশাসন তাদের মসজিদ এবং ওয়াকফ জমিতে নামায পড়ার জন্য প্রবেশাধিকার দিতে ব্যর্থ হয়, তবে ধর্মঘট করা হবে বলে জানান৷ অ্যাডভোকেট শহীদ আলি কটাক্ষ করে বলেন যে বিজেপি সরকারের প্রকাশ্যে ঘোষণা করা উচিত যে দেশে সংখ্যালঘুদের তাদের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা থাকবে না। ভারতীয় সংবিধান থেকে অনুচ্ছেদ ২৫ বাদ দেওয়া উচিত যাতে সংখ্যালঘু এবং বাকি বিশ্ব এ দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার অবস্থা জানতে পারে৷ জুম্মার নামায কোনও ধুমধাম, লাউডস্পিকার বা শ্রোতা ছাড়াই খোলা জায়গায় পড়া হয়। এটি এক ঘন্টারও কম সময়ে সম্পন্ন হয়৷ কিন্তু রাম নবমীর মিছিল এবং গোবর্ধন পুজোয় বেশি সময় লাগে, বেশি যানবাহন ব্যাহত হয়৷ তবু সেটা নিয়ে বিতর্ক হয় না৷