পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ আরিয়ান মামলায় (Aryan Khan Case) NCB-র (আঞ্চলিক প্রধান)সমীর ওয়াংখেড়েকে (Sameer Wankhede) সরানো হল। একের পর এক অভিযোগে ইতিমধ্যেই কোণঠাসা সমীর ওয়াংখেড়ে। এর পরেই তার বিরুদ্ধে তদন্তে নামে NCB। এবার আরিয়ান কাণ্ডের সরাসরি কোপ পড়ল সমীর ওয়াংখেড়ের ওপরে।
এদিকে প্রমোদতরীতে মাদক কাণ্ডে শর্তাধীনে জামিনে মুক্ত হয়ে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন শাহরুখ পুত্র আরিয়ান। প্রতি শুক্রবার তাকে NCB আদালত হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তদন্ত চলাকালীন বিদেশ যেতে পারবে না আরিয়ান।
এদিকে আরিয়ান জামিন পেলেও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না NCB-র আঞ্চলিক প্রধানের। ইতিমধ্যেই স্বামীর পাশে দাঁড়িয়ে সাংবাদিক বৈঠক সেরেছেন তাঁর স্ত্রী ক্রান্তি। তিনি দাবি করেছেন, একজন সৎ অফিসার বলেই তার স্বামীকে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। তবে সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্র সরকারের প্রতি তার সম্পূর্ণ আস্থা আছে। তার বিশ্বাস সঠিক বিচার করা হবে স্বামীর সঙ্গে।
এদিকে আরিয়ান কাণ্ড যতই তদন্ত এগিয়েছে ততই চাপে NCB-র আঞ্চলিক প্রধান সমীর ওয়াংখেড়ে। সমীরের নামে অভিযোগ সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসে এনসিবি। শুরু হয় তদন্ত।
সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে ‘ঘুষ’ নেওয়ার অভিযোগের তদন্তের জন্য মুম্বই পুলিশের ৪ সদস্যকে নিয়োগ করা হয়েছে। যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিশ্বাস নাগড়ে পাটিল এই বিষয়ে নির্দেশ জারি করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তদন্তের তত্ত্বাবধান করবেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এসিপি) দিলীপ সওয়ান্ত। চার সদস্যের দলে থাকছেন আজাদ ময়দান এবং কোলাবা থানার একজন করে অফিসার, সঙ্গে মুম্বই পুলিসের অ্যান্টি-নারকোটিক্স সেল (এএনসি)-র একজন অফিসার এবং বাহিনীর সাইবার সেলের একজন অফিসার।
প্রসঙ্গত, প্রমোদতরী থেকে গত ৩ অক্টোবর শাহরুখ পুত্র আরিয়ান খান গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই সরগরম হয় রাজ্য-রাজনীতি। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেন এনসিবি আঞ্চলিক প্রধান সমীর ওয়াংখেড়ে। এর পরেই একের পর এক অভিযোগ আসতে শুরু করে এনসিবি প্রধানের বিরুদ্ধে। যার ফলে চাপে পড়েন সমীর ওয়াংখেড়ে। এমনকী তাঁর পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে সোচ্চার হন তাঁর স্ত্রী ক্রান্তি।
আরিয়ান কাণ্ডে প্রভাকর সেল, সুধা দ্বিবেদী, কনিষ্ক জৈন এবং নীতিন দেশমুখ, আইআরএস অফিসার সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে ‘ঘুষের’ চারটি পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন। এখানেই শেষ নয়। আরিয়ানের বিরুদ্ধে সাক্ষী জোগাড় করতে প্রায় ২৫ কোটি টাকার বিনিময় হয়েছে বলে দাবি করেন এক প্রত্যক্ষদর্শী।
মাদক মামলায় আরিয়ানের গ্রেফতারির পর থেকে এনসিবি আধিকারিক সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ করছেন এনসিপি নেতা নবাব মালিক। সমীরের পেশাগত সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কখনও আবার দাবি করেছেন, সমীর আদতে মুসলিম। নিকাহনামাও প্রকাশ করেছে নবাব।
সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন সমীর ওয়াংখেড়ে।
সময় যত এগিয়েছে, আরিয়ান কাণ্ডে একের পর এক বিড়ম্বনায় জড়িয়েছেন সমীর। দলিত সংগঠনগুলির অভিযোগ, চাকরি পাওয়ার জন্য সমীর ওয়াংখেড়ে নিজেকে তপশিলি জাতিভুক্ত বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। জাল নথিপত্র পেশ করে সংরক্ষণের সুবিধা নিয়েছিলেন।
এদিকে মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিকের আরও অভিযোগ, আরিয়ানের গ্রেফতারের দিন সমীরের এক বন্ধুও নাকি ছিলেন প্রমোদতরীতে। তিনি আন্তর্জাতিক ড্রাগ মাফিয়া। সেই বন্ধুকে হাতে বন্দুক নিয়ে তার গার্লফ্রেন্ডকে সঙ্গে নিয়ে পার্টিতে নাচতেও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সব জেনেশুনেও সেই বন্ধুকে গ্রেফতার করেননি সমীর ওয়াংখেড়ে।