পুবের কলম ডেস্ক : দলিতকে বিয়ে করার শাস্তি। ‘শুদ্ধিকরণের’ করতে মাথা মুড়িয়ে, অর্ধনগ্ন অবস্থায় তাঁকে স্নান করানো হল নর্মদা নদীর জলে। জঘন্য ওই ঘটনাটি পুরোটাই হয়েছে তরুণীর বাবার তত্ত্বাবধানে। লজ্জাজনক ওই ঘটনার পর স্বামীর বাড়িতে পালিয়ে আসে সে। এমনই অভিযোগ বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের বেতুল জেলায়। পাশাপাশি নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন নির্যাতিতা।
ঠিক কী হয়েছিল সাক্ষী যাদবের সঙ্গে? গত বছর ১১ মার্চ ২৪ বছরের ওই তরুণী বিয়ে করেছিলেন ২৭ বছরের অমিত আহিরওয়ারকে। আর্য সমাজ মন্দিরে গিয়ে সাত পাকে বাধা পড়েন তারা। অভিযোগ, সাক্ষীর পরিবার এই বিয়ের বিরুদ্ধে। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে মেয়ের পরিবার কোতয়ালি থানায় অভিযোগ জানায়। তরুণী সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানান, ”২০২০-র ১১ মার্চ বিয়ে করি। ৪ জানুয়ারি, ২০২১ সালে বাবাকে খবরটি জানাই। এরপর পরিবার সেই মাসেই থানায় অভিযোগ করে।” তরুণীর অভিযোগ, পরিবারের সবাই জানতেন তারা কোথায় থাকেন। তাঁদের সঙ্গে দেখাও হয়েছিল পরিবারের। পুলিশে অভিযোগ দায়েরের পর সাক্ষী বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। স্বামীর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখবেন না, এই মর্মে তাঁকে কাগজে সইও করিয়ে নেওয়া হয়।যদিও সাক্ষী ফেব্রুয়ারিতেই বাড়ি ছেড়ে একটি হস্টেলে উঠে যান পড়াশোনা শেষ করবেন বলে।
এরপরই এই ঘটনায় নয়া মোড়। ১৮ আগস্ট রাখি বন্ধনের সময় মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসেন সাক্ষীর বাবা। কিন্তু দলিতকে বিয়ে করেছে। ‘শুদ্ধিকরণ’ তো করতেই হবে। অভিযোগ, সেই শুদ্ধিকরণের নামে মাথা মুড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রায় নগ্ন করে ভিড় নদীর তীরে সকলের সামনে অর্ধনগ্ন অবস্থাতেই স্নান করানো হয় সাক্ষীকে। ওই অবস্থায় হোস্টেলে ফিরে যান সাক্ষী। কিন্তু কোনও ভাবেই স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। গত বৃহস্পতিবার হোস্টেল থেকে পালিয়ে স্বামীর সঙ্গে দেখা করেন তরুণী। নব দম্পতির আশঙ্কা, সাক্ষীর বাবা হয়তো তাদের মেরে ফেলতে পারেন।
সাক্ষীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বাবা ও তিনজন আত্মীয়র বিরুদ্ধে ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তদন্ত শুরু হয়েছে। অন্যদিকে অমিতের দাবি, এর আগেও এই বিষয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি।