পুবের কলম প্রতিবেদক, হাওড়া: শব্দবাজির দৌরাত্ম্য আটকাতে ও আতশবাজি পোড়ানো বন্ধ করার আর্জি নিয়ে এবার অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে হাওড়ার মালিপাঁচঘড়া থানার পুলিশ। কালীপুজো দীপাবলির রাতে ছাদের তালা বন্ধ রেখে চাবি থানায় জমা দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে বহুতল আবাসনের মালিকদের। এমনিতেই কালীপুজোয় শব্দবাজির পাশাপাশি আতশবাজি ফাটানো নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে পরিবেশকর্মীদের। পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকেও বারবার আবেদন জানানো হয়েছে যাতে কেউ শব্দবাজি ব্যবহার না করেন এবং আতশবাজি না পোড়ানো থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু তা সত্বেও বারবারই অভিযোগ ওঠে রাস্তায়, পথেঘাটে পুলিশ নজর রাখলেও, বহুতল আবাসনগুলোতে অনেক ক্ষেত্রেই আতশবাজি পোড়ানোর ক্ষেত্রে কার্যত কোনও নিয়মই মানা হয়না। অভিযোগ, বহুতল আবাসনে বসবাসকারী বহু আবাসিক শব্দবাজি কিনে ছাদে বা টেরাসে ফাটান। অনেক ক্ষেত্রেই এমনও অভিযোগ ওঠে, বহুতল আবাসনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে ভিতরের ফাঁকা জায়গা বা ছাদে অবাধে শব্দবাজি ফাটানো হয়েছে। এসব বেনিয়ম আটকাতে এবার তাই বেআইনি শব্দবাজির বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে আগেভাগেই সতর্ক রয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশ।
জানা গেছে, কালীপুজোর ৩ দিন আগে থেকেই হাওড়ায় সিটি পুলিশ বাড়তি পুলিশ নজরদারি চালাবে। বহুতল বাড়ি ও আবাসনেও নজরদারি করা হবে। সন্ধ্যের পর থেকে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চলবে। মঙ্গলবার হাওড়ার মালিপাঁচঘড়া থানার তরফ থেকে আয়োজিত এক সমন্বয় বৈঠকে সকলকে আদালত ও সরকারি নির্দেশ মেনে চলতে বলা হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে যাতে কেউ শব্দবাজি না পোড়ায় সেকথা বলা হয়। মঙ্গলবারই মালিপাঁচঘড়া থানা পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে সালকিয়ার কৃষ্ণা ভবনে কালীপুজো, দীপাবলি, জগদ্ধাত্রী পুজো ও ছটপুজো উপলক্ষ্যে এক সমন্বয় বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে সব পুজো কমিটি, সিইএসসি, দমকল, পুরনিগমের পাশাপাশি এলাকার বহুতল আবাসনের প্রতিনিধিদেরও (প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি) আহ্বান জানানো হয়। সেখানেই কালীপুজো দীপাবলি, জগদ্ধাত্রী পুজো ও ছটপুজোতে সরকারি নির্দেশ ও হাইকোর্টের আদেশ মেনে চলতে বলা হয়। নিয়ম মানলে পুরস্কারেরও ঘোষণা করা হয়।
মালিপাঁচঘড়া থানা সূত্রের খবর, ওই থানা এলাকায় যেসব বহুতল আবাসন রয়েছে তাঁদের কাছ থেকে এই মর্মে এবার লিখিত নেওয়া হচ্ছে যে আবাসনে কোনও শব্দবাজি ফাটানো হবে না। ছাদ থেকে কোনও আতশবাজি পোড়ানো হবে না। বহুতল আবাসনের প্রতিনিধিদের কাছে মালিপাঁচঘড়া থানার তরফ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে কালীপুজোর একদিন আগে ছাদে তালা লাগিয়ে চাবি থানায় জমা করে দিতে। যাতে না কেউ বহুতলের ছাদে আতশবাজি না পোড়ান। যেসব আবাসনের বাসিন্দারা আতশবাজি না পুড়িয়ে পুলিশ প্রশাসনকে সবরকম সহায়তা করবেন সেইসকল বহুতল আবাসনের জন্য থানার তরফ থেকে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। এছাড়া আগামী ছট পুজোর সময় যেসকল ছটপুজো ঘাট কমিটিগুলো নিরাপত্তামূলক নির্দেশ মেনে চলবেন এবং যত বেশি ঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারবেন মালিপাঁচঘড়া থানার তরফ থেকে তাদের জন্যও এদিন পুরষ্কার ঘোষণা করেছে। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক গৌতম চৌধুরী, হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি নর্থ অনুপম সিং, এসিপি নর্থ-১ আবদুল গফফর, মালিপাঁচঘড়া থানার আইসি অমিত কুমার মিত্র সহ সিইএসসি, দমকল, পুরনিগমের আধিকারিকরা।