পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ অবশেষে বাংলার দেখানো পথেই হাঁটছে অবশিষ্ট ভারত। রাজ্যের কন্যারা যাতে শিক্ষিত স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে সেই লক্ষ্যে বাংলায় কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার এই প্রকল্প আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রশংসিত এবং সম্মানিত হয়। সেই প্রকল্পের অনুকরণে ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্য অসমে চালু হল ‘মুখ্যমন্ত্রী নিযুত ময়না’
লোকসভা ভোট মিটতেই অসম সরকারের এই নয়া প্রকল্প নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত। তিনি বলেন, যে সকল ছাত্রী দশম শ্রেণি পাশ করে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হবে, তাঁরা উচ্চমাধ্যমিক পাশ না করা অবধি মাসে ১,০০০ টাকা করে পাবে (গরমের ছুটির ২ মাস বাদে)। অর্থাৎ উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা অবধি একজন ছাত্রী ২ বছরে মোট ২০,০০০ টাকা পাবে। প্রত্যেক মাসের ১১ তারিখ এই টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে।
উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে যে ছাত্রীরা ডিগ্রি কোর্সের জন্য ভর্তি হবে, তাঁরা প্রত্যেক মাসে ১২৫০ টাকা করে স্টাইপেন্ড পাবেন। আগামী ৩-৪ বছরের জন্য (যতদিন স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ হচ্ছে না) প্রত্যেক মাসে তাঁদের অ্যাকাউন্টে এই টাকা ঢুকে যাবে। এদিকে আবার যারা মাস্টার্স তথা স্নাতকোত্তর ও বিএড কোর্সে ভর্তি হবেন, তাঁরা কোর্স না শেষ হওয়া অবধি প্রতি মাসে ২৫০০ টাকা করে পাবেন।
এক কথায়, কোনও ছাত্রী একাদশ শ্রেণিতে এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করলে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা অবধি মোট ২০,০০০ টাকা পাবেন। তিন বছরের স্নাতক স্তরের পড়াশোনা ধরলে তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ৪৫,০০০ টাকা এবং স্নাতকোত্তর বা বিএড পড়াকালীন পাবেন ৬০,০০০ টাকা।
তবে অসম সরকারের ‘মুখ্যমন্ত্রী নিযুত ময়না’ প্রকল্পের সুবিধা কিন্তু সব মেয়ে পাবে না। বিধায়ক এবং মন্ত্রীর মেয়েরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না। যে সকল ছাত্রী স্কুটার কিংবা সরকারের তরফ থেকে দেওয়া অন্যান্য কোনও সুবিধা পান, তাঁরাও এই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত থাকবেন। এছাড়াও এই প্রকল্পের লক্ষ্য যেহেতু বাল্যবিবাহ রোখা, তাই বিবাহিত স্কুল ও কলেজ ছাত্রীরা এর সুবিধা পাবেন না। তবে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াকালীন বিয়ে করলে সুবিধা মিলবে। এছাড়াও র্যাগিং কিংবা শৃঙ্খলাহীনতার সঙ্গে যুক্ত থাকলে কিংবা পরীক্ষায় খারাপ ফলাফল করলে, উপস্থিতির হার কম থাকলেও কিন্তু স্টাইপেন্ড বন্ধ হয়ে যাবে।
রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ লক্ষ মেয়ে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের জন্য প্রথম বছরে ৩০০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে বলে অনুমান। ৫ বছরে সেই অঙ্কটা দাঁড়াতে পারে ১৫০০ কোটি। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পে অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রীসভা।