পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সক্রিয় রাজনীতিতে উঠে এল এক সংখ্যালঘু মেয়ের নাম। ওড়িশায় প্রথম মহিলা বিধায়ক হয়েছেন সোফিয়া ফিরদৌস। বারাবতী-কটক কেন্দ্রে বিজেপির পূর্ণচন্দ্র মহাপাত্রকে আট হাজারেরও বেশি ভোটে হারিয়ে রাজ্যের প্রথম মুসলিম মহিলা বিধায়ক শিরোপা কুড়িয়ে নিয়েছেন সোফিয়া। রাজনীতি জগতের পাশাপাশি বরাবরই মেধাবী ছাত্রী তিনি। সোফিয়া ফিরদৌস সিআইআই ইন্ডিয়ান গ্রীন বিল্ডিং কাউন্সিলের ভুবনেশ্বর অধ্যায়ের সহ সভাপতি এবং আইএনডব্লিউইসি ইন্ডিয়ার একজন মূল সদস্য।
৩২ বছরের সোফিয়া বেঙ্গালুরু আইআইএমের স্নাতকোত্তর। সেইসঙ্গে তাঁর পরিবারেও রয়েছে রাজনীতির রক্ত। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা মুহাম্মদ মোকুইমের মেয়ে সোফিয়া। ‘মেট্রো বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড’-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুহাম্মদ মোকুইমকে ‘ওড়িশা রুরাল হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড’-এ আর্থিক কেলেঙ্কারির জন্য ভিজিল্যান্স আদালতে দোষী সাব্যস্ত করায় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেননি মোকুইম। দল বেছে নেয় সোফিয়াকে।
২০২৪ সালের ওড়িশা বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস মোকুইমের পরিবর্তে তাঁর মেয়ে সোফিয়া ফিরদৌসকে মনোনীত করেছিল। সোফিয়া ফিরদৌস বরাবরই সামাজিক অনুষ্ঠানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে থাকেন। নির্বাচনী প্রচারণায় অনেকবার বাবাকে সাহায্য করতে দেখা গেছে তাঁকে। সুপ্রিম কোর্টে ঋণ জালিয়াতির মামলায় মোকুইমের সাজা স্থগিত করতে অস্বীকার করার পরে কংগ্রেস এই আসন থেকে সোফিয়াকে মনোনয়ন দেয়।
সোফিয়া পেশায় একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। একইসঙ্গে তিনি একটি রিয়েল এস্টেট ফার্মের পরিচালকও। কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হয়েছেন। ২০২২ সালে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান তিনি। ২০২৩ সালে সোফিয়া কনফেডারেশন অফ রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার ভুবনেশ্বর চ্যাপ্টারের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগে তাঁর বাবার সংস্থা ‘মেট্রো বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড’-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রাজ্যের বিশিষ্ট শিল্পপতি মেরাজ উল হক তাঁর স্বামী। স্ত্রীর জয়ের পরে সমাজমাধ্যমে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মেরাজ।
ওড়িশার প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী নন্দিনী শতপথীও বারামতী-কটক আসন থেকে ১৯৭২ সালে বিধায়ক নির্বাচিত হন। সেই জয়ের ধারা বজায় রাখলেন সোফিয়া। ২০২৪ সালে ওড়িশা বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৪৭টি আসনের মধ্যে ৭৮টি আসনে জয়লাভ করে এবং বিজু জনতা দলের ২৪ বছরের অবসান ঘটেছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপি রাজ্যের ২১টি আসনের মধ্যে ২০টিতে জয় পেয়েছে। ২০২৯ সালের নির্বাচনে তাদের ১২টির সংখ্যার চেয়ে আটটি বেশি পেয়েছে এইবারের নির্বাচনে। বাকি আসনটি কংগ্রেসের দখলে। বিজেডি একটি আসনও জিততে পারেনি।