পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ প্রায় তিনমাস-ব্যাপী চলা অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফা আগামী ১ জুন। এই নির্বাচনী প্রচার শেষে লাটবহর নিয়ে ধ্যানে বসতে চলেছেন দেশের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২০১৪ এবং ২০১৯-এর ধারাবাহিকতায় এবারে তাঁর গন্তব্য স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতি বিজড়িত কন্যাকুমারী। ৩০ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত ওখানেই থাকবেন মোদি। দেশের সবচেয়ে দক্ষিণাঞ্চলের এই জেলাতে প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে তৈরি করা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তার বেষ্টনী। নজরদারির জন্য নিয়োগ করা হয়েছে ২ হাজার পুলিশ কর্মী-সহ দেশের বিভিন্ন সরকারি নিরাপত্তা এজেন্সির কর্মীদের। এরপূর্বে ২০১৪ সালে প্রতাপগড়ে এবং ২০১৯ সালে কেদারনাথে একইভাবে ধ্যানে বসেছিলেন তিনি। তবে প্রধানমন্ত্রীর এই ধ্যান নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী তৃণমূল।
শীর্ষ নিরাপত্তা সূত্রে জানা গেছে, মোদি ৩০ মে তিরুবনন্তপুরমে আসবেন এবং একটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টার নিয়ে কন্যাকুমারীতে যাবেন, বিকেল ৪.৩৫ মিনিটে অবতরণ করবেন। সন্ধ্যা ৬টা ৩৪ মিনিটে তিনি সূর্যাস্ত প্রত্যক্ষ করবেন। ১ জুন বিকেল সাড়ে তিনটেয় কন্যাকুমারী থেকে ফিরবেন। তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দর থেকে, তিনি ৪ টে ১০ মিনিটে দিল্লির উদ্দেশ্যে আইএএফ বিমানে উঠবেন।
মোদির এই ধ্যানের জন্য পর্যটকদের সপ্তাহান্তে তাঁদের পরিকল্পনা বাতিল করতে বলা হয়েছে। আশেপাশের ছোট ব্যবসায়ীদের কার্যক্রম সীমিত করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। ছোট শহরের সমস্ত লজ এবং হোটেল বুকিং নিরাপত্তাকর্মীদের নজরদারিতে থাকবে।
জানা গেছে, বিবেকানন্দ রকের চারপাশে কোস্টগার্ডের টহল ছাড়াও উপকূল রক্ষী জাহাজের সঙ্গে প্রায় ১ হাজার পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হবে। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী ধ্যান করবেন তাই রকের উপর নিরাপত্তা কর্মীদের সীমাবদ্ধ করার সম্ভাবনা রয়েছে। দশজন এসপিজি কমান্ডোদের একটি দল নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে সোমবার কন্যাকুমারী পৌঁছেছে। বিবেকানন্দ কেন্দ্রে থাকবেন মোদি।
তবে মোদির এই ধ্যান ঘিরে সুর চড়িয়েছেন বিরোধী দলগুলি। বুধবার বারুইপুরের নির্বাচনী সভা থেকে এই নিয়ে মোদিকে নিশানা করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর ধ্যানে বসা নিয়ে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু সেই ছবি টেলিভিশনের পর্দায় সম্প্রচারিত হলে সেটা নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করবে। সেক্ষেত্রে ৩০ মে সন্ধ্যে ৬টার পর প্রধানমন্ত্রীর ধ্যানে বসা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হবে। ধ্যান করলেই ক্যামেরা ছুটবে। প্রত্যেকবার দেখবেন, নির্বাচনের শেষ দফার ৪৮ ঘণ্টা আগে কোথাও না কোথাও ঢুকে বসে থাকেন। আর লোককে দেখায়, ধ্যান করছি।”
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কটাক্ষ করে বলেন, “লোকে যখন পুজো করে ছবি তুলতে হয়? নাকি সমুদ্রের হাওয়া খেয়ে অক্সিজেন নেবে আর ৪৮ ঘণ্টা প্রচার চালাবে। উনি ধ্যান করবেন করুন, কিন্তু টিভিতে দেখাতে পারবে না। কারণ সেটা আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করবে। ১ জুন ভোট আছে। ৩০ তারিখ সন্ধ্যে ৬টার পরে আমরা এই বিষয়ে অভিযোগ জানাবো। সমুদ্রের উপর একটা ভাল জায়গা। ওখানে লোকে ঘুরতে যান। স্বামীজি খুব ভালবাসতেন। আর সেখানে গিয়ে উনি ধ্যান করবেন। উনি নাকি দেবতার থেকেও বড় দেবতা। তাই যদি হয়, তবে ওঁর ধ্যান করার কী প্রয়োজন, লোকে ওঁর ধ্যান করবে। তাঁকে নাকি ঈশ্বর পাঠিয়েছেন। তিনি নাকি ঈশ্বরের দূত।”