নাজির হোসেন লস্কর, মগরাহাট: মগরাহাটের যুগদিয়া নিবাসী বিশিষ্ট আলেম মাওলানা আলি আকবর কাশেমী ইন্তেকাল (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) করেছেন৷ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা নাগাদ নিজ গৃহে মৃত্যুবরণ করেন৷ মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৮৭ বছর৷
মাওলানা আকবার সাহেব ছিলেন যুগদিয়া হান্নানিয়া মাদ্রাসার হেড মোদারিস ও মক্তব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান৷ এছাড়া ছিলেন যুগদিয়া হাই মাদ্রাসার আরবি বিষয়ের শিক্ষক৷ ২০০০ সালে তিনি অবসরগ্রহণ করেন৷ মাওলানা ডিগ্রি অর্জন করেন উত্তরপ্রদেশে দারুল উলুম থেকে৷ মরহুম মাওলানা মসিহুর রহমান, মরহুম মুফতি রবিউল মণ্ডল, মাওলানা রফিকুল্লা মালি, হাফেজ আব্দুল হান্নান, মাওলানা আলি আকবর ও মুফতি লিয়াকত আলি প্রমুখ আলেমদের হাত ধরে হান্নানিয়া মাদ্রাসাকে দ্বীনি শিক্ষার পীঠস্থান হিসেবে গড়ে উঠেছে৷ মাদ্রাসার সুফি কমিটির অন্যতম সদস্য আকবর সাহেবের মৃত্যুতে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া৷
সুস্থ অবস্থায় নিত্যদিন সকাল সকাল পৌঁছে যেতেন হান্নানিয়া মাদ্রাসায়৷ এলাকার শিশুরা সকালে মাদ্রাসার মক্তব বিভাগে চলে আসত তাঁরই অধীনে থাকা মক্তব বিভাগে৷ সেখানে দেওয়া হয় তালিমের পাশাপাশি ইসলাম ও আরবি ভাষা চর্চার প্রাথমিক শিক্ষা৷ সবল অবস্থা পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন আকবর সাহেব৷ ইসলামের প্রতি ভালোবাসার আলো ছড়িয়ে দিতেন শিশুমনে। হাস্যোজ্জ্বল মুখ ও বিনয়ীভাব মানুষকে তাঁর কাছে নিয়ে আসত।
উল্লেখ করতে হয়, প্রতি ঈদে আকবর সাহেব মাদ্রাসার মাইকে হাঁক দিতেন নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার৷ এলাকায় মানুষকে আহ্বান করতেন, ঈদের নামায আদায়ের জন্য যথা সময়ে পৌঁছানোর বার্তা৷ এমন আলেমের মৃত্যুতে এলাকার পাশাপাশি মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে নেমে আসে শোকের ছায়া৷
এদিন বাদ জোহর তাঁর জানাযায় হাজারে হাজারে মানুষ সামিল হন হান্নানিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন ময়দানে৷ অশ্রুভরা বেদনা নিয়ে জানাযা পড়ান আকবর সাহেবের মেজ ছেলে মাওলানা হুসাইন আহমেদ৷
বড় পুত্র আকিল আহমদ জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়ার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগীয় অধ্যাপক৷ এদিন আলেমদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আব্দুল হামিদ কাশেমী, মুফতি আজম হোসেন, ড. শামসুদ্দিন মল্লিক, মুফতি লিয়াকত আলি, মাওলানা আনোয়ার হোসেন কাসেমী প্রমুখ৷