পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ কয়লা পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিল আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। মঙ্গলবার সকালেই বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন লালা। তাঁকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়ে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিশেষ আদালতের বিচারক। তিন বছর ধরে সুপ্রিম কোর্ট লালাকে রক্ষাকবচ দিয়েছে, কিন্তু তারমধ্যে এর বিরোধিতা করে কেন শীর্ষ আদালতে গেল না সিবিআই তা নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেন বিচারক।
২১ মে’র মধ্য়ে কয়লা পাচার মামলার চার্জশিট সব পক্ষকে দেওয়ার নির্দেশ জারি করেছে আসানসোল আদালত। সুপ্রিম কোর্টে ইতিমধ্য়েই রক্ষাকবচ পেয়েছেন অনুপ মাঝি। তবে নিম্ন আদালতের নির্দেশ পালন করতে হবে বলেও জানিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে কয়লা পাচার মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। তদন্তে উঠে আসে লালার নাম। তাঁর বাড়ি, অফিসে তল্লাশি চালানো হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় সম্পত্তি। লালার সঙ্গী-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে তিন জন জামিন পেলেও লালার সঙ্গী এখনও বন্দি দিল্লির তিহাড় জেলে। অভিযোগ উঠেছিল, লালার সঙ্গে গরু পাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত এনামুল হকেরও যোগাযোগ ছিল। এর আগে, লালাকে রক্ষাকবচ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। লালাকে গ্রেফতার করতে পারবে না সিবিআই, এমনই নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। অন্য দিকে, এই মামলায় চার্জ গঠন করে তদন্ত শেষ করতে সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিল
উল্লেখ্য, সোমবারই আসানসোলে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়েছে। তার পরদিনই আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন লালা। কলকাতা হাইকোর্টের এক আইনজীবী এসেছেন আসানসোলে আত্মসমর্পণের প্রক্রিয়ার জন্য।
সিবিআইয়ের পাশাপাশি ইডিও কয়লা পাচারকাণ্ডে তদন্ত করছে। ইডির মামলায় কিন্তু রক্ষাকবচ নেই লালার। তাই এই কেন্দ্রীয় এজেন্সি লালাকে গ্রেফতারের পথে হাঁটবে কি না তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, ইডির গ্রেফতারি এড়াতেই আত্মসমর্পণ করেছেন লালা। ২১ মে এই মামলায় চার্জশিট পেশ করার কথা রয়েছে তদন্তকারী সংস্থার। লালাকে গ্রেফতার করতে না পারলেও জিজ্ঞাসাবাদ করায় বাধা নেই। লালার খোঁজ শুরু করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু খোঁজ পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার অবশেষে আত্মসমর্পণ করলেন লালা। ঘটনাচক্রে সোমবারই আসানসোলে ভোট ছিল।
রাজ্য রাজনীতিতে বারবারই আলোচিত হয়েছে কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনা। কয়লা পাচারের অভিযোগে বাংলার শাসকদলকে বারবারই নিশানা করেছে বিজেপি-সহ বিরোধীরা। এই মামলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেশ কয়েক বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। লোকসভা ভোটের আবহে লালার আত্মসমর্পণ নয়া মাত্রা যোগ করল বলেই মনে করা হচ্ছে।