পুবের কলম প্রতিবেদক: সোমবার কলকাতার পার্ক সার্কাসের ক্রাইস্ট দ্য কিং চার্চে অনুষ্ঠিত হল এক ঈদ মিলন অনুষ্ঠান। দক্ষিণ কলকাতার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মাইনোরিটি সেলের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন জনাব বিজলী রহমান। ঈদ মিলন অনুষ্ঠান হলেও এই সভায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির তৎপরতা এবং তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রের প্রার্থী মালা রায়কে জেতানোর জন্য বক্তরা আহ্বান জানান।
তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা, মহানগরের মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ছিলেন এই অনুষ্ঠানের মুখ্য বক্তা। তিনি বলেন, কারা মাইনোরিটি? মাইনোরিটি হচ্ছে ভারতের সংখ্যালঘু খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, মুসলিম, জৈন, পার্সি এইসব ধর্মের মানুষরা। তারা স্বাভাবিকভাবেই একটু দুর্বল। আর তারা যেন সংখ্যাগুরু নাগরিকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারেন, সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই সচেষ্ট ছিলেন। তিনি অগ্রাধিকার দিয়েছেন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাস্তা নির্মাণ প্রভৃতি বিষয়ে। যা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলির উন্নয়ন ও বিকাশে বড় ভূমিকা পালন করেছে। আগে ডাক্তারি পরীক্ষা, ইঞ্জিনিয়ারিং, ডব্লিউবিসিএস, পুলিশ প্রভৃতি বিভাগে মুসলিমদের সংখ্যা ছিল খুবই সামান্য। আর বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, মুসলিম ছেলেমেয়েরা ব্যাপক হারে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছে। ডব্লিউবিসিএস-এও তাদের যোগদান প্রায় ২৫ শতাংশ। তার মানে শিক্ষা ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুরা এখন অনেকটাই এগিয়েছে। মুসলিমরা ব্যবসায় পিছিয়ে থাকলেও চর্ম শিল্প, নির্মাণ শিল্প প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাদের উন্নতি উল্লেখযোগ্য।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছেন। সিএএ করে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আপনাকে প্রথমে বলতে হবে, আপনি বিদেশী নাগরিক। তারপর ওরা (বিজেপি) দিলে হবেন ভারতীয়। সেটা হতে ক’বছর লাগবে, কীভাবে হবে কোনও কিছু ঠিক নেই। পাকিস্তানে শিয়া মুসলিম বা আহমদিয়ারা নির্যাতিত হয়। তারা কেন ভারতে আশ্রয় পাবে না? বিজেপি আসলে সবথেকে বেশি অত্যাচার করবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলির উপর। যেমন ইউপি, মধ্যপ্রদেশ প্রভৃতি বিজেপি শাসিত রাজ্যে হচ্ছে। মিথ্যা মামলায় জেলে ঢোকাচ্ছে, বুলডোজার চালাচ্ছে। এই বিপদ থেকে সংখ্যালঘুদের বাঁচানোর জন্য মমতা ব¨্যােপাধ্যায় লড়াই করছেন। তিনি সংখ্যালঘুদের জন্য গ্যারান্টি স্বরূপ। কাজেই দেখতে হবে একটি ভোটও যেন অন্যত্র না যায়। গেলে কিন্তু হয়তো বিজেপি প্রার্থী জয়ী হবে। এ ছাড়া সিপিএম-কেও ভোট দিয়ে ভোট নষ্ট করবেন না। আমরা হিন্মু মুসলিম মিলিয়ে এক সমৃদ্ধ বাংলা গড়তে চাই।
মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান তাঁর বক্তব্যে রাজ্যের সর্বত্র তৃণমূল কংগ্রেসকে জয়ী করার আহ্বান জানান। পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়ছেন দেশকে রক্ষা করার জন্য। গণতন্ত্র ও সংবিধানকে বাঁচানোর জন্য। তাই রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসকেই ভোট দিতে হবে।
এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মণীশ গুপ্ত, সাংসদ নাদিমূল হক, প্রাক্তন বিধায়ক ডা. কাশেম, বরো চেয়ারম্যান সানা আহমেদ, সুস্মিতা ভট্টাচার্য প্রমুখ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন অ্যাঞ্জেলিনা জাসনানি ম্যান্টোস, ইস্তিয়াক আহমেদ রাজু প্রমুখ