গাজা, ১৩ মে: গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহ শহরে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরাইল। যদিও হামাস প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে। এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে অন্তত তিন লাখ উদ্বাস্ত ফিলিস্তিনি রাফাহ শহর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার দিনভর একের পর এক বিস্ফারণের আঘাতে কেঁপে ওঠে গাজা উপত্যকা। দক্ষিণাঞ্চলের পাশাপাশি গাজার উত্তরাঞ্চলেও একযোগে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। বিস্ফারণের ফলে নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নাগরিক।
গত শনিবার ফের রাফাহ শহর খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল। গাজার দক্ষিণের শহর রাফায় আরও বড় ধরনের হামলা শুরু হতে পারে। যে কারণেই রাফার আরও বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এক্স-হ্যান্ডেলে এক বার্তায় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানান, “উত্তর গাজার জাবালিয়া এলাকার বাসিন্দা এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের এবং প্রতিবেশী আরও ১১টি এলাকার লোকজনদের গাজার পশ্চিমের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।”
আআইডিএফ জানিয়েছে, “এপর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ গাজাবাসী আল-মাওয়াসির দিকে চলে গেছে। গাজার স্থানীয় বাসিন্দা, মানবিক গোষ্ঠীগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত চাপ উপেক্ষা করে রাফায় আরও তীব্র অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছে ইসরাইল। গত সাত মাস ধরে চলা যুদ্ধে প্রায় ১ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি সেখানে আশ্রয় নিয়েছিল।”
প্রসঙ্গত, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে ১০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা রাফাহ শহরে আশ্রয় নেয়। গত সোমবার (৬ মে) রাফার পূর্বাঞ্চলে হামলা চালানো হবে বলে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। তাদের এই নির্দেশনার পর এখন পর্যন্ত ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ শহরটি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। ফের প্রাণভয়ে ৩ লক্ষ মানুষ গাজা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিল।
অন্যদিকে, রাফাতে হামলা করলে ইসরাইলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে বাইডেন হুমকিকে উড়িয়ে দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের হামাসকে পরাজিত করতে যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে ইসরাইল একা লড়াই করবে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলমান যুদ্ধে ইসরাইলি সেনাদের হামলায় ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ১৫ হাজারই শিশু। আর আহতের সংখ্যা ৭৮ হাজার ৭শ ৫৫ জন। গাজায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ ইসরাইলি হামলার সময় অনেক এলাকায় ধসে পড়া ভবনের নিচে অসংখ্য মৃতদেহ চাপা পড়ে রয়েছে।