পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: সংখ্যালঘু ভোট নিজেদের ঝুলিতে পুরতে মরিয়া দেশের কথিত ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ রাজনৈতিক দলগুলি। নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রীর মুসলিম বিদ্বেষী ভাষণ নিয়ে রে রে করে উঠেছিল তারা। বিশেষ করে শতাব্দী প্রাচীন দল কংগ্রেস। তবে মুখে যতই মুসলিম প্রেমের বুলি আওড়াক না কেন বাস্তবে চিত্র যে অনেকটা আলাদা, তা কংগ্রেসের গুজরাতের প্রার্থী তালিকা দেখলেই বোঝা যায়। জানা গেছে, মোদি- রাজ্য গুজরাত থেকে লড়ছেন ৩৫ শতাংশ মুসলিম প্রার্থী। অথচ কংগ্রেস একজন মুসলিমকেও প্রার্থী করেননি। যা অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
এমনকি ভারুচ লোকসভা কেন্দ্রেও কোনও মুসলিম প্রার্থী দেননি তারা। এই কেন্দ্রে তুলনামূলক মুসলিম সংখ্যা বেশি । অতীতে বহুবার এই কেন্দ্র থেকে মুসলিম প্রার্থী ভোটে দাঁড়িয়েছে। এমনকি বিপুল ভোটে জয়লাভ পর্যন্ত করেছে তারা। অথচ অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে এবারে গুজরাতে একটাও মুসলিম প্রার্থী দেয়নি কংগ্রেস। যা স্বাভাবিকভাবেই বাঁকা চোখে দেখছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। আসলে এবার এই আসনটি গিয়েছে আম আদমি পার্টির কাছে। কারণ গুজরাতে আপের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে লড়ছে কংগ্রেস। জাতীয় দলগুলির মধ্যে একমাত্র বহুজন সমাজপার্টি গান্ধীনগর থেকে এক মুসলিম প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ময়দানে নামিয়েছে।
লোকসভা নির্বাচনের আসন্ন দফায় গুজরাতের ২৬টি আসনের মধ্যে ২৫টি আসনে ৩৫ জন মুসলিম প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যারা প্রত্যকেই ‘স্বাধীন’ ভাবে লড়াই করছেন। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ছিল ৪৩।
ঘটনার প্রেক্ষিতে গুজরাত কংগ্রেসের সংখ্যালঘু বিভাগের সভাপতি ওয়াজির খান এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, সাধারণত প্রতিবার লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্য থেকে অন্তত এক মুসলিম প্রার্থীকে টিকিট দেয় দল, বিশেষ করে ভারুচ আসন থেকে। তবে এবারে তা সম্ভব হয়নি। গুজরাতে আপ-কংগ্রেস একত্রে লড়াই করছে। ভারুচ আসন পেয়েছে আপ। তবে কংগ্রেস একটি আসনে হলেও মুসলিম প্রার্থীকে টিকিট দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু জেতার সম্ভাবনা ক্ষীণ থাকায় প্রার্থীরা নিজেরাই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি বলেন, আহমেদাবাদ দক্ষিণ ও কচ্ছ মুসলিম অধ্যুষিত হলেও ওই দুটি আসন তফসিলি জাতির প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত। ভারুচ ছাড়াও কংগ্রেস অতীতে নভসারি, আহমেদাবাদ থেকে মুসলিমদের টিকিট দিয়েছে। ১৯৭৭ সালে কংগ্রেসের হয়ে লড়ে সংসদে পা রাখেন দুই মুসলিম প্রার্থী। আহমেদাবাদ থেকে লড়ে জয় ছিনিয়ে এনেছিলেন এহসান জাফরি ও ভারুচ থেকে লড়েছিলেন আহমেদ প্যাটেল। ২০০৪, ২০০৯ ও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভারুচ থেকে মুহাম্মদ প্যাটেল, আজিজ ট্যাঙ্কারভি ও শেরখান পাঠানকে প্রার্থী করেছিল কংগ্রেস। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নভসারি আসন থেকে মকসুদ মির্জা একমাত্র মুসলিম প্রার্থী হিসেবে টিকিট পেয়েছিলেন। এবার মায়াবতীর নেতৃত্বাধীন বিএসপি মুহাম্মদ আনসি দেশাইকে গান্ধীনগর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য টিকিট দিয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছেন বিজেপির হেভিওয়েট ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গুজরাতের ২৫টি লোকসভা আসন যেগুলিতে ভোট রয়েছে তার মধ্যে গান্ধীনগরে সর্বাধিক সংখ্যক আটজন মুসলিম প্রার্থী রয়েছেন।