পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এসএসসিতে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। উচ্চ আদালতে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গেছে রাজ্য। গত শুনানিতে এই মামলায় চাকরি বাতিলের উপর স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিমকোর্ট।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটার কিছু পড়ে কিছু পরেই শুরু হয় চাকরি বাতিল মামলার শুনানি। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য এবং এসএসসি’র বক্তব্য শোনে। পাল্টা প্রশ্নও করে।
এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে এসএসসি জানায়, যখন মাথাব্যথা হয়, তখন পুরো কাটা ফেলে হয় না। এ দিন শীর্ষ আদালতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে জানানো হয়, কলকাতা হাইকোর্টের তরফে যে রায় দেওয়া হয়েছে, তাতে পর্ষদের ক্ষেত্রে অনিয়মের কোনও বিষয় তুলে ধরা হয়নি। যেখানে যোগ্যদের সঙ্গে অযোগ্যদের আলাদা সম্ভব, সেখানে অভিজ্ঞ শিক্ষক এবং পঠন-পাঠন চালিয়ে যাওয়ার জন্য সেই কাজটা করতে হবে।
কিন্তু যদি একটা পুরো প্রজন্মের শিক্ষকদের হারিয়ে ফেলে রাজ্য, তাহলে ভবিষ্যতের হেডমাস্টার এবং পরীক্ষকদের হারিয়ে ফেলা হবে। সেই বিষয়টি যাতে সুপ্রিম কোর্টে বিবেচনা করে, সেই আর্জি জানানো হয় পর্ষদের তরফে। যা বিবেচনা করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। তারপরই পর্ষদের আইনজীবী বলেন, ‘যখন মাথাব্যথা হয়, তখন আপনি আপনার পুরো মাথা কেটে ফেলেন না।’
এসএসসি নিয়োগ মামলায় ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে, তা নিয়ে শীর্ষ আদালতে আজ শুনানি চলছে। সুপ্রিম কোর্ট জানতে চায় যে কেন সুপারনিউমেরিক পদ তৈরি করা হয়েছিল। সেটার প্রেক্ষিতে বিভিন্নরকম যুক্তি সাজানো হতে থাকে। সেইসঙ্গে রাজ্যের তরফে দাবি করা হয় যে কোনও খারাপ উদ্দেশ্যে সেই কাজটা করা হয়নি।
সেইসবের মধ্যেই ওএমআর শিট নিয়ে প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানতে চান, ‘ওএমআর শিট এবং স্ক্যান করা কপি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে?’ সেই প্রশ্নের উত্তরটা ‘হ্যাঁ’ হওয়ায় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এরকম সংবেদনশীল বিষয়ে কেন আপনারা টেন্ডার ডাকেননি?’ সেইসঙ্গে এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কেন অন্য সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চ বলেছে, ‘এটা পদ্ধতিগত জালিয়াতি। এখন সরকারি চাকরি অত্যন্ত দুষ্প্রাপ্য এবং সামাজিক গতিশীলতার জন্য দেখা যায়। যদি নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জালিয়াতি হয়, তাহলে সিস্টেমে কী থাকবে? মানুষ আস্থা হারাবে।’