পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক : উপমহাদেশে তলোয়ারের মাধ্যমে ইসলাম ছড়িয়ে পড়েছে৷ আরএসএস এবং অন্যান্য সাম্প্রদায়িক শক্তি বারবার এই প্রপাগান্ডা সামনে নিয়ে আসে৷ এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে কর্ণাটকের প্রাক্তন স্পিকার কে আর রমেশ কুমার বলেছেন, যদি ইসলাম তরবারির মাধ্যমে ছড়ানো হত, তাহলে আজ এই দেশে একটি হিন্দুও থাকত না৷ যেহেতু মুসলিম শাসন ৮০০ বছর ধরে এ দেশে চলেছিল৷ কুমার বেঙ্গালুরুতে প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ড. এসওয়াই কুরাইশির বই ‘দ্য পপুলেশন মিথ’-এর লঞ্চ অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন। তিনি সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আক্রমণ করে বলেন যে তারা ভারতের সংবিধানের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করছে। গত রবিবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রাক্তন স্পিকার এবং পাঁচবারের কংগ্রেস বিধায়ক কুমার বলেন, যদি মুসলিম শাসকরা তাদের ৮০০ বছরের শাসনকালে জোর করে এই দেশে ইসলাম প্রচার করত, তাহলে একজন হিন্দুও থাকত না আজকের ভারতে৷
তিনি আরও বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রচার যার কোনও ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। তিনি বলেন, মুসলিম শাসনের ইতিহাস এবং দেশের উন্নয়নে তাদের অবদান বিকৃত করার চেষ্টা চলছে। দেশের বিভিন্ন স্থানের যেভাবে নাম পরিবর্তন চলছে, তার প্রেক্ষিতেই যে এই মন্তব্য তা স্পষ্ট৷ তার ভাষায়, মুসলমানরা এই দেশের জন্য যা অবদান রেখেছে তা মানুষের মন থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে এবং ঐতিহাসিক সত্যগুলোকে বিকৃত করে এমনভাবে মানুষের সামনে উপস্থাপন করা হচ্ছে যাতে মনে হয় মুসলমানরা জোর করে ইসলাম প্রচার করেছে৷ কিন্তু সেই প্রপাগান্ডা যে সত্য নয়, তা তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন৷
জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে কুরেশির বইয়ের প্রশংসা করে কুমার বলেন, বইটি মুসলিম জনসংখ্যা বিস্ফোরণের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে উপযুক্ত জবাব। কুমারের মতামতের সঙ্গে একমত কর্নাটকের প্রাক্তন মন্ত্রী ডা. এইচ.সি. মহাদেবপ্পাও৷ তিনি বলেন, মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, তারা জোর করে ইসলাম প্রচার করেছে, তার কোনও ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। মুসলমানরা এই দেশে ৮০০ বছর শাসন করেছে এবং মুসলিম শাসনের পর ২০০ বছর ব্রিটিশরা দেশ শাসন করেছে৷ কিন্তু সেই সময়কালে ভারতকে ইসলামি রাষ্ট্র বা খ্রিস্টান রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করার কোনও চেষ্টা করা হয়নি।
ডা. মহাদেবপ্পা বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি দেশে ক্ষমতা দখল করার পর বলা হচ্ছে যে দেশটি হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত হবে। সাধারণ ভারতীয়, হিন্দু হোক বা মুসলমান, উভয়ই একসঙ্গে এবং শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চায়৷ কিন্তু মুষ্টিমেয় মানুষ তাদের স্বার্থের জন্য বিদ্বেষের বীজ বপন করছে।