কিবরিয়া আনসারী: মুর্শিদাবাদের ‘ঈদ মিলনী উৎসব’ থেকে সম্প্রীতির বার্তা দিলেন মাইনোরিটি কমিশনের চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান। তাঁর কথায়, ‘আমাদের বাংলা সম্প্রীতির বাংলা। আমরা নফরত চাই না, আমরা চাই মুহব্বত। সমস্ত ধর্ম, বর্ণ ও জাতির মানুষের সঙ্গেই আমরা মুহব্বত চাই। সেই মুহব্বতের ডাকেই আজকের ঈদ মিলনী উৎসব।’
মঙ্গলবার অল ইন্ডিয়া ইমাম-মুয়াজ্জিন অ্যান্ড সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন-এর মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় মহতী ঈদ মিলনী উৎসব।
মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের অডিটোরিয়াম হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাইনোরিটি কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান। সেখানেই সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন ইমরান।
এই বহু বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন। জেলার ইমাম-মুয়াজ্জিনদের উদ্দেশ্যে ইমরানের বক্তব্য, ‘গত ক’দিন আগেই পবিত্র রমযান মাস শেষ হয়েছে। রহমতের রমযান মাসে আমরা হিন্দু-মুসলিম একসঙ্গে ইফতার করেছি। আমাদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ যেন না আসে।’ আসন্ন লোকসভা ভোট নিয়ে ইমরানের বার্তা, নির্বাচনে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। সবাই গণতন্ত্রের উৎসবে শামিল হবেন। মাথায় রাখবেন প্রত্যেকটা ভোট যেন গণতন্ত্র, সংবিধান ও অধিকারের পক্ষে পড়ে। যাকে খুশি ভোট দিন, কিন্তু ফ্যাসিবাদীদের ভোট দেবেন না। আপনারা জানেন, এই ফ্যাসিবাদকে রুখতে একমাত্র বাংলার নেত্রীই পারবে। আপনারা সমাজের সম্মানীয় ব্যক্তি, আপনাদের মানুষকে এগুলো বোঝাতে হবে।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতির প্রসঙ্গে ইমরানের সাফ বক্তব্য, ‘আমরা চাই না আমাদের ঘরের উপর বুলডোজার চলুক। আমরা চাই না নিরীহ-নিরপরাধ মানুষকে ধরে জেলে ভরুক। ফ্যাসিবাদ যেন বাংলায় মাথাচাড়া দিতে না পারে, তার জন্য আমাদের লড়াই করতে হবে। ওরা (বিজেপি) ভোট চাই ধর্মের ভিত্তিতে, আমরা চাই উন্নয়নের নিরিখে। বিজেপির কাছে ধর্মীয় জিগির ছাড়া কোনও অস্ত্র নেই। তাদের জেতার একমাত্র উপায় ধর্মীয় অস্ত্র। ধর্মীয় জিগির তুলে বিজেপি কত জায়গায় দাঙ্গা করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে। আমাদের ফ্যাসিবাদকে রুখতেই হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সকলেই শ্রীরামকে শ্রদ্ধা করি। তাঁকে নিয়ে কোনও রাজনীতি করতে চাই না। কিন্তু কিছু মানুষ রামকে নিয়ে রাজনীতি করছে। আমরা চাই না ‘রাম’ রাজনীতির শিকার হোক। রাম সকলের হৃদয়ে শ্রদ্ধার আসনে থাকুক।’
একইসঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন ইমরান। তাঁর কথায়, ‘ভেবে দেখুন তৃণমূল ক্ষমতায় এসে বাংলায় কত উন্নয়ন করেছে। দিদির সময়ে স্বাস্থ্য-শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বেড়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলায় মুখ্যমন্ত্রী অনেক কিছু করেছেন। এই জেলার সংখ্যালঘু ছেলেমেয়েরা শিক্ষায় অনেক এগিয়ে গিয়েছে। মুর্শিদাবাদ ও বহরমপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীদের জেতান। আগামী দিনে আরও উন্নয়ন হবে।’