দেবশ্রী মজুমদার, নানুর: জল নেমে যাওয়ার সাথে সাথে একটু একটু করে অন্য গ্রামগুলো ছন্দে ফিরতে চাইলেও, সেসব থেকে এখন অনেক দূরে সুন্দরপুর। কারণ কোলের কাছে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় কোন বাড়ি ঘর দোরের চিহ্ন নেই। অজয় নদ গোটা গ্রামটাকে মানচিত্র থেকে একেবারে হাওয়া করে দিয়েছে।
গ্রামের বাসিন্দা মঙ্গিলা মাঝি, পরেশ মাঝি ও পবিত্রবালা মাঝিরা বলেন, পরনে কাপড় ছাড়া কিছুই নেই। গরু ছাগল কিছু নেই। বাঁধের উপরে আছি সরকার ত্রিপল দিয়েছে। আজ দুটো থালা, বাটি, গ্লাস, বাসন কোসন, কেরোসিন, স্টোভ, চাল ও আলু দিয়েছে।
জানা গেছে, তাকোরা, নতুন হাট, পুরাতন হাট, ডাঙা পাড়া, সিডাই যেখানে জল নেই। মাটির বাড়িতে অল্প বিস্তর ক্ষতি হয়েছে, তারা ফিরে আসছে। কিন্তু সুন্দরপুরে মাটির বাড়ির কোন ছার, পাকা বাড়ি নিশ্চহ্ন।
জানা গেছে, সাতরা ও বামুনিয়াতে রান্নাবান্না হচ্ছে দুর্গতদের জন্য। রাস্তাঘাট তালাই জড়ানো করে ধুয়ে মুছে দিয়েছে বন্যার জলের তোড়। সেখানে আপাতত সংস্কার চলছে। অনেক ইলেকট্রিক খুঁটি পড়ে গেছে। বৈদ্যুতিকরণের কাজ শনিবার সম্পূর্ণ হয়েছে। পানীয় জলের হাহাকার রুখতে সাবমার্সিবল পাম্ম বসানো হচ্ছে সুন্দরপুরে। শনিবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ডিভিশনাল কমিশনার বিজয় ভারতী সুন্দরপুর সরেজমিনে আসেন। তিনি রাস্তাঘাট, ফসল, গবাদিপশু হানি, বাড়ি ঘরের ক্ষয়ক্ষতি সব দেখে গেছেন। নানুর ব্লকের বিডিও সৌভিক ঘোষাল বলেন,
নানুর ব্লকের একাই সুন্দরপুরে ক্ষতি দশ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। ন’নগরকোড্ডা সহ চোদ্দ পনেরোটা গ্রাম মিলে ক্ষতির পরিমাণ পঁচিশ কোটি। জেলা শাসক বিধান রায় বলেন, শনিবার পর্যন্ত এই ক্ষতির পরিমাণ একশো ছয় কোটি।