পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ইস্তেহার প্রকাশ করল কংগ্রেস। কর্মসংস্থান, পরিকাঠামোর উন্নয়ন, জাতীয় জাতগণন-সহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হয়েছে ইস্তেহারে। এদিন দিল্লিতে দলীয় ইস্তেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, সনিয়া গান্ধি ও রাহুল গান্ধি। ইস্তেহার বানানোর নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তিনিও উপস্থিত ছিলেন এদিন। এদিন খাড়গে বলেন, তাঁদের এবারের নির্বাচনী ইস্তেহারের মূল বক্তব্যই হল ‘বিচারের ইস্তেহার’। তাঁর অভিযোগ, বিজেপির গত ১০ বছরের শাসনকালে ভারতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ন্যায় ব্যবস্থা। তাই তাঁদের ইস্তেহারে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, পঞ্চ ন্যায়কে। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এই ইস্তেহারের নাম ‘ন্যায়পত্র’। কংগ্রেসের ইস্তেহারে ‘পাঁচ ন্যায়’ বা ন্যায়বিচারের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে ছিল ‘যুব ন্যায়’, ‘নারী ন্যায়’, ‘কিষান ন্যায়’, ‘শ্রমিক ন্যায়’ এবং ‘অংশিদারী ন্যায়’।
ইস্তেহারে বলা হয়েছে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে তফসিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষণের ৫০ শতাংশের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর জন্য সংবিধান সংশোধন করা হবে । নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করে দেশের ৩০ লক্ষ সরকারি শূন্যপদে চাকরি, ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নগদহীন স্বাস্থ্যবিমা, মহিলাদের আর্থিক সহায়তা, জাতগণনা এবং ৫০ শতাংশ পর্যন্ত জাতভিত্তিক সংরক্ষণ ও আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া উচ্চবর্ণের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি মিলল। এছাড়াও অগ্নিপথ প্রকল্প ভেঙে সেনায় সরাসরি নিযুক্তির কথা বলা হয়েছে। পার্টি বদলের সঙ্গেই জনপ্রতিনিধির বিধায়ক বা সাংসদপদ বাতিলের মত ইস্যু জায়গা পেয়েছে ইস্তেহারে। এছাড়াও ন্যাশনাল জুডিশিয়াল কমিশন স্থাপনের কথা বলছে কংগ্রেস।
২৫ বছরের কমবয়সি স্নাতকদের জন্য এক বছরের জীবিকামুখী শিক্ষানবিশ হওয়ার সুযোগ দেওয়ার সাংবিধানিক অধিকারের কথা রয়েছে। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, কেন্দ্রে কংগ্রেস ক্ষমতা দখল করলে জম্মু ও কাশ্মীরের পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। নরেন্দ্র মোদি জমানায় চালু করা অস্থায়ী ‘অগ্নিবীর’ নিয়োগ কর্মসূচি বাতিল করে সেনাবাহিনীতে স্থানীয় নিয়োগ কর্মসূচি ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে ইস্তাহারে।
তফসিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তির জন্য অর্থ দ্বিগুণ করা হবে, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য। কংগ্রেস দরিদ্রদের, বিশেষত তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক বিদ্যালয়ের একটি নেটওয়ার্ক স্থাপন করবে এবং প্রতিটি ব্লকে তাদের প্রসারিত করবে। ইস্তেহারে সংবিধানের ১৫, ১৬, ২৯ এবং ৩০ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ভাষাগত সংখ্যালঘুদের অধিকারকেও সম্মান ও সমর্থন করার কথা বলা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের পোশাক, খাদ্য, ভাষা ও ব্যক্তিগত আইন প্রণয়নের স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে কংগ্রেস, বলা হয়েছে ইস্তেহারে। জানুয়ারি মাসে ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’য় রাহুল জানিয়েছিলেন, তার এ যাত্রা পাঁচটি ন্যায়ের উপরে দাঁড়িয়ে। সেই ন্যায়ের অঙ্গীকারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই তৈরি হয়েছে কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তেহার।