কাবুল, ১৫ মার্চ: ভারতে লাগু হয়েছে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)। আর এটি জারির পরই ইসলামিক আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালিবান সরকারের মুখপাত্র সুহেল শাহিন আইনটির তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবার জন্য প্রযোজ্য হওয়া উচিত আইনটি। আফগানিস্তানে বসবাসকারী সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের খবরও অস্বীকার করেন তিনি। আসলে সিএএ বা সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টটি ২০১৯ সালে পাস হয়। আইনটি প্রণয়নের উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের অমুসলিমদের ভারতে নাগিরকত্ব দেওয়া। ভারত সরকার বলেছিল, যেসকল অমুসলিম ওই দেশগুলিতে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন ও দেশ থেকে পালাতে চাইছেন তাদেরই ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এই আইনের খবর প্রকাশ পেতেই সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা শুরু হয়। কারণ এই আইনটির মাধ্যমে ভারতীয় সংবিধানে সংরক্ষিত ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে। তালিবান মুখপাত্র ও রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত আফগান দূত সুহেল শাহিন বলেন, ‘সিএএ সব দেশে বসবাসকারী নিপীড়িতদের জন্য হওয়া উচিত, তারা হিন্দু, মুসলিম বা শিখ যেই হোন না কেন।’ একই সময় তিনি জনান, ‘আফগানিস্তানে শিখ বা হিন্দুদের মতো সংখ্যালঘুরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে না। তাদের ধর্মীয় রীতি-রেওয়াজ পালনের অধিকার রয়েছে এদেশে। আইনে আমার যা অধিকার তাদেরও তাই অধিকার।’ শাহিন আরও বলেন, ‘আমি আশা করি আফগানিস্তানে যেমন হিন্দু ও শিখরা নির্যাতিত হচ্ছে না তেমনই ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমরাও নির্যাতিত হচ্ছে না।’ আফগানিস্তানের পর পাকিস্তানও নাগরিকত্ব আইনের সমালোচনা করে বলেছে, ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বিভাজন করা হচ্ছে এই আইন দিয়ে। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালোচ বলেন, ‘আইনগুলি একটি মিথ্যা ধারণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলের মুসলিম দেশগুলিতে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করা হচ্ছে এবং ভারতকে তাদের জন্য একটি আশ্রয়স্থল হিসাবে দেখানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসনামলে হিন্দুত্ববাদীদের উত্থানের মাধ্যমে মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভাবে কোণঠাসা করা হয়েছে। জাহরার কথায়, বিগত কয়েকদিন ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এসব কিছুই দেখেছে। তিনি ভারত সরকারকে দেশে মানবাধিকার রক্ষা ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বন্ধের আহ্বান জানান।