বিশেষ প্রতিবেদন: রোযার মাস চলছে। সারা বিশ্বের মুসলিমদের পাশাপাশি রোযা রাখছেন ফিলিস্তিনের মানুষরাও। কিন্তু ইসরাইলে বন্দি অবস্থায় থাকা প্রায় ৯,১০০ ফিলিস্তিনির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। রমযান মাসে বন্দি থাকা ফিলিস্তিনিদের রোযা-নামাযে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইসরাইলের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, জেলে বন্দি থাকা ৯,১০০ ফিলিস্তিনিকে সেহরি ও ইফতারের জন্য কোনও খাবার দেওয়া হচ্ছে না। এসকল বন্দিদের অনাহারে রেখে হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছে! ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স ক্লাব জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলের আক্রমণ শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিনি বন্দিদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। জেলে তাদেরকে ঠিকমতো খেতে দেওয়া হচ্ছে না। ঠিক কীভাবে সেই বন্দিদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে তা জানিয়েছে প্রিজনার্স ক্লাব। বলা হয়, ইসরাইলের জেলে বন্দি ফিলিস্তিনিদের খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বা কোনও কোনও ক্ষেত্রে খাবার দেওয়াই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে জেলে ফিলিস্তিনি বন্দিরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। প্রিজনার্স ক্লাব জানায়, ইসরাইল ইচ্ছা করেই এমন খাবার বন্দিদের দিচ্ছে যা কাঁচা ও খাওয়ার যোগ্য নয়। কিছু কিছু বন্দি শিবিরে পচা-গলা মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া প্যাকেটজাত খাবার দেওয়া হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের। এসব খেয়ে বন্দিদের পক্ষে রোযা রাখা অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠছে। আরও অভিযোগ, ফিলিস্তিনিদের নামায আদায়েও বাধা দিচ্ছে জেল কর্তৃপক্ষ। তেলাওয়াতের জন্য বন্দিরা কুরআন চাইলে তাও মিলছে না। আরও বলা হয়, কারাগারের অন্ধকার কক্ষে থেকে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না বন্দিরা, তাদের সঙ্গে বাইরের দুনিয়ার যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। বর্তমানে ইসরাইলি জেলগুলিতে এরকম প্রায় ৯,১০০ ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন। এদের মধ্যে ৩,৫৫৮ জন হলেন ইসরাইলের প্রশাসনিক আটকাদেশে শিকার। এই বন্দিদের বিচারকাজও স্থগিত করে রেখেছে ইসরাইল। এদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ গঠন হয় না, ফলে আদালতে ট্রায়ালও হয় না। ইসরাইলি নির্যাতনের প্রতিবাদে ফিলিস্তিনি বন্দিরা বহুবার কারাগারে অনশন করেছেন। তবে এতেও ইসরাইলি অত্যাচার এতটুকু কমেনি। প্রতিবারই ইসারইলের কৌশলগত নির্যাতন, অত্যাচার, হেনস্তা ও শোষণের শিকার হতে হয়েছে ফিলিস্তিনি বন্দিদের।