লখনই, ৭ মার্চ: কংগ্রেসে ভাঙন অব্যাহত। এবার কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন প্রবীণ সাংসদ। দলে সম্মান পাননি বলেই বিজেপি যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা রাজেশ মিশ্র। উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর কংগ্রেস সাংসদ ছিলেন তিনি। প্রবীণ সাংসদের দলত্যাগে বড় ধাক্কা খেল কংগ্রেস বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। মিশ্রের দলত্যাগ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রেও বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ৬২ বছর বয়সী প্রবীণ কংগ্রেস নেতা। গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েই কংগ্রেস দলের বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। দলে সম্মান না পাওয়ার অভিযোগও তোলেন রাজেশ মিশ্র। তিনি বলেন, ‘আমি টিকিট বা পদ কোনওটিই চাইনি। আমি শুধু দলের কাছে সম্মানটুকু চেয়েছিলাম, যেটা রাজনীতিতে প্রয়োজন। কিন্তু সেই সম্মান দল আমাকে দেয়নি।’ বিজেপিতে যোগদানের কারণ ব্যাখ্যা করে বারাণসীর প্রাক্তন সাংসদ বলেন, “দেশকে উন্নত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাজ প্রশংসনীয়। আমি মোদিজিকে দেখেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। মোদীজির কোনও তুলনাই হয় না।”
ছাত্র রাজনীতি দিয়েই রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন রাজেশ মিশ্র। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র নেতা হিসেবে প্রথম রাজনীতির আঙিনায় পা রাখেন তিনি। ১৯৮৪ সালে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু ইউনিয়ন না থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি। ১৯৮৬ সালে নির্দল হিসেবে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এমএলসি নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরের বছর কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন মিশ্র। ২০০৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে বারাণসী থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। ওই কেন্দ্রের তিনবারের বিজেপি সাংসদ শঙ্কর প্রসাদ জয়সওয়ালকে পরাজিতও করেছিলেন মিশ্র। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বারাণসী কেন্দ্রে পরাজিত হন তিনি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তাঁকে আর টিকিট দেয়নি কংগ্রেস। ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে মোদীর বিরুদ্ধে কংগ্রেস নেতা অজয় রাইকে প্রার্থী করে কংগ্রেস। এরপর থেকেই কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছিলেন বর্ষীয়ান নেতা। উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি করা হয় অজয় রাইকে। এরফলে গত বছর থেকেই দলের উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি।
এদিকে, মিশ্রের কংগ্রেস ত্যাগ দলের অপূরণীয় ক্ষতি বলেই মনে করছে উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, মিশ্রের দলত্যাগের ফলে পূর্ব উইপিতে বেশ কয়েকটি আসনকে প্রভাবিত করবে। বারাণসী, চান্দৌলি, মির্জাপুর এবং গাজিপুর লোকসভা আসনগুলিতে রাজেশ মিশ্রের ভালো প্রভাব ছিল। এক কংগ্রেস নেতার কথায়, “দলের একজন বর্ষীয়ান নেতাকে হারানো দুঃখজনক। কিন্তু আমরা কী করতে পারি?”
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তিনি অন্য কোনও আসন খুঁজছেন কিনা জানতে চাইলে মিশ্র বলেন, “আমি ভাদোহি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি। কারণ আমি কংগ্রেসে থাকাকালীন সেখান থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলাম। তবে কোনও আসন নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। সিদ্ধান্ত দলীয় নেতৃত্বের উপরেই ছেড়ে দিয়েছি।”