পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ করোনার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলেছে দুর্যোগ। প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেন আর কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। মৃত্যু থেকে জখম যেন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে সঙ্গী করে মানুষকে কাজে বের হতে হচ্ছে। বেঁচে থাকাটাই এখন বড় দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুম্বইতে ভেসে গেল বাস। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। অন্যদিকে কলকাতার আহিরীটোলায় ধসে পড়ল বাড়ি। চলছে উদ্ধারকাজ।
মহারাষ্ট্রের কোঙ্কন উপকূলে আগামী ২৪ ঘন্টায় অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। মুম্বইয়ের যাভতমলে জলের তোড়ে ভেসে গেছে একটি আস্ত যাত্রীবাহী বাস। মঙ্গলবারের বাস দুর্ঘটনা সম্পর্কে মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে জানানো হয়, মঙ্গলবার সকালে একটি বাস নাগপুর থেকে নান্দেদ যাওয়ার পথে যাভতমল জেলার একটি ছোট ব্রিজ পার করার সময় জলের তোড়ে ভেসে যায়। পরে সেটি টাল সামলাতে না পেরে উল্টে যায়। সেই সময় বাসে চালক ও কন্ডাটর ছাড়াও মোট চারজন যাত্রী ছিলেন, এদের মধ্যে তিন মারা গেছে। কন্ডাটরের মৃতদেহ উদ্ধার হলেও চালকের খোঁজ মেলেনি।
বিড, ওসমানাবাদ, পার্বনি থেকে ২ জন করে এবং জালনা, লাতুর ও বিদর্ভ অঞ্চল থেকে ১ জন করে মারা গিয়েছে। নাসিকে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে একজনের, আহত ৪ জন। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর এখনও পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অবস্থায় ১৩৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৫৬০ জনের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে। প্রায় ২০০-এর বেশি গবাদি পশুর খোঁজ নেই।
রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে খবর, ভারী বৃষ্টির জেরে গত ১ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে মোট ৪৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৬০০-রও বেশি গৃহপালিত পশু, ৯১, ৫১০টি খামারজাত পাখির মারা গেছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, মারাঠওয়াড়া, মুম্বই সহ মহারাষ্ট্রের কোঙ্কন উপকূলে আগামী ২৪ ঘণ্টাতেও অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। সব থেকে বেশি বৃষ্টির কবলে মধ্য মহারাষ্ট্রের আটটি জেলা, ওরঙ্গাবাদ, লাতুর, ওসমানাবাদ, পারবানি, নান্দেদ, বিড, জালনা ও হিঙ্গোলি। বৃষ্টির জেরে মানজারা বাঁধ পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় প্রশাসনকে ১৮টি গেট খুলে দেয়। এর ফলে বিড এলাকা প্রায় জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বন্যার সতর্কতা জারি হয়েছে।
নিম্নচাপের জেরে কলকাতা সহ পাশ্বর্বর্তী জেলাগুলিতে রাত থেকেই চলছে ভারী বৃষ্টি। এখনও দুর্যোগ অব্যাহত। বুধবার ভোররাতে উত্তর কলকাতার ১০ নম্বর আহিরীটোলা স্ট্রিটের একটি পুরনো বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে। ভিতরে আটকে পড়েন কয়েকজন বাসিন্দা। তড়িঘড়ি উদ্ধারকাজে নামে দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও পুলিশ।
স্থানীয়রা সূত্রে খবর, দোতলা বাড়িটি দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়েছিল। বাড়িতে লোকজনের বাস রয়েছে। দীর্ঘদিন কোনও সংস্কারও হয়নি। ভোর রাতে হুড়মুড়িয়ে কিছু ভেঙে পড়ার শব্দ পান তারা। মানুষের আর্তনাদ শুনে মানুষ ছুটে গিয়ে দেখেন এই অবস্থা। ধবংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।