পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সম্প্রতি স্বস্তি পেয়েছিল আদানি গ্রুপ। কিন্তু আবার নতুন করে গৌতম আদানিকে চাপে ফেলতে পদক্ষেপ নিলেন অনামিকা জয়সওয়াল। অনামিকা নামের এই আবেদনকারী সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, গত ৩ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট আদানির সংস্থা নিয়ে যে রায় দিয়েছিল, তা যেন পুনর্বিবেচনা করা হয়।
আমেরিকার সংস্থা হিন্ডেনবার্গ অভিযোগ করেছিল, শেয়ারের দামে কারচুপি করে রাতারাতি নিজেদের ব্যবসা ও সস্পত্তি বাড়িয়েছিলেন গৌতম আদানি। এই ঘটনার তদন্ত হোক সিবিআই বা অন্য কোনও তদন্তকারী সংস্থার মাধ্যমে, এই দাবি জানানো হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু সুপ্তিম কোর্ট সেইসব মামলা খারিজ করে দিয়ে জানুয়ারির শুরুতে রায় দেয়, সেবিই আদানির বিরুদ্ধে তদন্ত করবে। কিন্তু সেবির রায় কতটা নিরপেক্ষ হবে সেই নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল প্রায় সকলে। এবার ওই রায়কেই নতুন করে বিবেচনা করতে বললেন অনামিকা জয়সওয়াল।
তার দায়ের করা রিভিউ পিটিশনে বলা হয়েছে, সুপ্রিম রায়ে একাধিক ত্রুটি ছিল। নতুন কয়েকটি তথ্য দেখিয়েছে, আদানিগ্রুপ সিকিওরিটি সংক্রান্ত বেশ কিছু নিয়মও লঙ্ঘণ করেছে। তাই শেষবার আদালতের দেওয়া রায় নতুন করে পর্যালোচনা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
আবেদনকারীর মতে, সিকিওরিটিজ কন্ট্র্যাক্টস (রেগুলেশন) রুলস ১৯৫৭ এর ১৯ এ ধারা লঙ্ঘণ করেছে আদানি গ্রুপ। সেখানে বলা হয়েছে, বেসরকারি তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ন্যূনতম ২৫ শতাংশ পাবলিক শেয়ারহোল্ডিং বজায় রাখতে হবে। কিন্তু সে নিয়মের তোয়াক্কা করেনি আদানির কোম্পানি ।
আবেদনকারীর পক্ষ থেকে রিভিউ পিটিশন দায়ের করেছে আইনজীবী নেহা রাঠি। তিনি বলেছেন, নতুন কয়েকটি তথ্য দিতে চান আবেদনকারী। তার কক্তব্য, অতীতেও সেবির নজরদারিতে ত্রুটি পাওয়া গেছিল।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট একটি কমিটি গঠন করেছিল আদানি মামলার তদন্তের জন্য। কমিটির মাথায় বাসানো হয়েছিল প্রাক্তন বিচারপতি এ এম সাপ্রে কে। সুপ্রিম কোর্ট সেবিকে নির্দেশ দিয়েছিল নিরপেক্ষ তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা যে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল, সেই অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে কোনও ত্রুটি খুঁজে পায়নি সেবি।
আবেদনকারী এও বলেছিলেন, সেবির তদন্তে প্রভাব খাটানো হতে পারে। কারণ সেবির সঙ্গে যুক্ত সংস্থা সিরিল অমরচন্দ মঙ্গলদাস এর প্রতিষ্ঠাতা সিরিল শ্রফের কন্যার বিবাহ হয়েছে গৌতম আদানির পুত্রের সঙ্গে। সেক্ষেত্রে সেবির তদন্তে প্রভাব খাটাতে পারেন গৌতম আদানি। তাছাড়া এক্সপার্ট কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে বর্তমানে হাইকোর্টের বিচারপতি সোমাশেখর সুন্দারেসানকে। কিন্তু অতীতে তিনি গৌতম আদানির আইনজীবী ছিলেন। রায় পুনর্বিবেচনা করার আবেদন নতুন করে আদানিকাণ্ডের তদন্তের মন্থর গতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে কিনা তাই এখন দেখার।