পুবের কলম প্রতিবেদক: বাংলাকে বকেয়া টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে কলকাতার মেয়ো রোডে আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে চলছে তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান কর্মসূচি। চলবে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। শনিবার ছিল ধরনা মঞ্চের নবম দিন। এ দিন উত্তর ২৪ পরগনার হাজার হাজার তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকরা হাজির হন।
এদিন ধরনা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন দলের তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মন্ত্রী রথীন ঘোষ, মন্ত্রী সুজিত বোস, বিধায়ক তাপস রায়, বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, জয়প্রকাশ মজুমদার, অর্জুন সিং, প্রাক্তন সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি একেএম ফারহাদ প্রমুখ। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদ স্লোগানে এ দিন সভাস্থল মুখরিত হচ্ছিল।
রাজ্যের আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজ, মিড-ডে মিল-সহ একাধিক প্রকল্পে টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র সরকার। তার প্রতিবাদে এ দিন সভা মঞ্চে সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার কেন্দ্রীয় সরকারের বিভাজন ও ধর্মীয় রাজনীতির তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, ২০১৪ সাল থেকে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এসেও গরিব মানুষের জন্য কিছুই করতে পারেনি।
শুধু ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন করা ছাড়া কিছুই হয়নি। মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগিয়ে ভারতজুড়ে দাঙ্গা লাগাতে চাইছে কেন্দ্রের শাসক দল। একত্রিত হয়ে রাম-বাম রাজনীতি বন্ধ করবে মানুষ।
দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, দিল্লিতেও আমাদের উপর আক্রমণ হয়েছে। আক্রমণ ও গ্রেফতার করে আন্দোলন দমিয়ে রাখা যায় না। আর কেন্দ্র সরকার যে পন্থা অবলম্বন করে চলেছে, তারা মানুষের হিতাকাঙ্ক্ষী হতে পারে না। সুজিত বসুর কথায়, এ রাজ্যের সরকার উন্নয়নকে সামনে রেখে এগোতে চায়। মানবদরদি মুখ্যমন্ত্রী মেয়েদের সম্মান বাড়িয়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করেছেন।
এ দিন ধরনা মঞ্চে পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান বিজেপির বিদ্বেষ-রাজনীতির নিন্দা জানান। ইমরান বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস ভোট করে মানুষের উন্নয়নের কথা বলে। এখানে কৃষি ও শিল্পের উন্নতি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জন্য স্কিল ট্রেনিং, ঋণ প্রদান, স্কলারশিপ প্রদান সবই হচ্ছে। রয়েছে স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী থেকে শুরু করে জনমুখী তিন ডজন প্রকল্প। এখানে হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন। বিজেপির ভোট চাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সাধারণ মানুষের কথা নেই। তাদের বক্তব্য মন্দির, মসজিদ, গরিব ও দুর্বল শ্রেণির উপর বুলডোজার ব্যবহার, ধর্মীয় বিদ্বেষ এবং সংখ্যালঘুদের অত্যাচার। মণিপুরে খ্রিস্টানদের উপর কী ঘটেছে, তা সারাবিশ্ব জানে। তাই ফ্যাসিবাদকে রুখতে বাংলার ৪২টি আসনই দিদিকে উপহার দিতে হবে।
খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, বিভিন্ন খাতের টাকা আটকে থাকলেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের জন্য কাজ করে চলেছেন। কোনওভাবে রাজ্যের এই উন্নয়নকে আটকে দেওয়া যাবে না। সঠিক সময়ে সাধারণ মানুষ তার জবাব দেবে।
ধরনা মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেচ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, ইতিহাস বিকৃত করে মানুষের মন জয়ের চেষ্টা হচ্ছে। আর এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়ন করে দেখাচ্ছেন । মানুষের পাশে থাকছেন। কেন্দ্রের সরকারের সঙ্গে রাজ্য সরকারের পার্থক্য এটাই।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ একেএম ফারহাদ জোরালো বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ভারতকে ভেঙে দেওয়ার অপচেষ্টা হচ্ছে। এ দেশের সংবিধানকে ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। রাম-বাম মিশে রাজনীতি চলছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মানুষই বিজেপির এই রাজনীতি রুখবে’।