দেবিকা মজুমদার: আজ বিধানসভায় রাজ্য বাজেট পেশ হতে চলেছে। এরপর ৯ তারিখ পুর বাজেট নিয়ে মেয়র পরিষদদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। যদিও বৈঠকের আগেই মোটের ওপর সব মেয়র পারিষদরাই তাঁদের নিজ নিজ দপ্তরে কি কাজ হবে, আগের বাজেটে বরাদ্দ অর্থ কতটা কোন কোন খাতে খরচ হয়েছে এবং এবারের পুর বাজেট থেকে তাদের কতটা বরাদ্দ প্রয়োজন তার একটি তালিকা তৈরি করে ফেলেছেন।
কিছু দপ্তরের তরফে এ বিষয়ে মেয়রের কাছে তথ্যও পাঠানো হয়েছে। তবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে যেহেতু বিভিন্ন সমাজকল্যাণ মূলক প্রকল্পের ওপর জোর দেন তাই এবছর পুর বাজেটে সমাজ কল্যাণ মূলক প্রকল্পের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ বেশ খানিকটা বাড়বে বলেই আশা রাখেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ সমাজ কল্যাণ ও নগর দরিদ্র দূরীকরণ এবং ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিতালী বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুবের কলমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মিতালী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাড়বে তো বটেই। মেয়রকে আমার বলা আছে। আশা করি মহানাগরিক কোনও মেয়র পারিষদের ক্ষেত্রেই না করবেন না। তবে পূর্ন বাজেট না দেখে বলা সম্ভব নয় কতটা বাড়বে। ঘাটতি কি আছে বা আদৌ ঘাটতি আছে কিনা সেটা মেয়র কি ঘোষণা করেন সেই অনুযায়ী বোঝা যাবে।
একইসঙ্গে, কেন্দ্রের অন্তর্বর্তী বাজেটকে একেবারে অন্তহীন বাজেট হিসেবে ব্যাখ্যা করে মিতালী ব্যানার্জী বলেন, এটা তো অন্তর্বর্তী বাজেট না। অন্তহীন বাজেট। এটা ওদের শেষ বাজেট তাই অন্তহীন বাজেট। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী কন্যাশ্রী প্রকল্পে যে টাকা দিয়েছে, সেটা ওরা সারা ভারতবর্ষে দেয় না। ওরা কন্যাশ্রীর জায়গায় ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’-তে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। আমাদের আগের বাজেটেই কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিল হাজার কোটি টাকা। এবছর মুখ্যমন্ত্রী বরাদ্দের পরিমাণ আরো নিশ্চই বাড়াবেন।
তিনি আরো বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থ বর্ষের জন্য এই দপ্তরের জন্য ২৬.১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। আমার গতবছরের বরাদ্দ অর্থ সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার হয়ে গিয়েছে। মেয়রও খুশি। আমি বলেছি আগামীদিনে আর একটু কিছু বাড়ানোর জন্য। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। কিছু না হোক কুড়ি শতাংশ তো বাড়বে।
পাশাপাশি, একশো দিনের কাজের টাকা রাজ্য সরকার দিয়ে দেবে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে ঘোষণা করেছেন তার প্রভাব পুর বাজেটে কতটা পড়বে সে প্রসঙ্গে পত্রিকার তরফে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, কিছু প্রভাব পড়া তো উচিৎ। তবে এর জন্য পুর বাজেটে সামাজিক প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ কমবে না বলেই আশাবাদী। মুখ্যমন্ত্রী নিজে সামাজিক প্রকল্পকে বাইরে রেখে কিছু ভাবেন না। যেমন মা কিচেন পাঁচ টাকায় খবর দেওয়া হয়। এটা ওনার চিন্তা প্রসূত। সুতরাং উনি কি জানেন না যে কিছু প্রকল্প চালু করতে হবে। যেখানে প্রকল্প আরো বাড়ানো হয়েছে মনে আরও টাকা দিতে হবে। যেমন বার্ধক্য ভাতা। উনি বলেছেন, এখনও যার যার বাকি আছে, তাদের সবাইকে ডেকে বকেয়া মিটিয়ে দিতে। এতদিন দুয়ারে সরকার করলাম এখন ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আছে সমস্যা সমাধান প্রকল্প। মুখ্যমন্ত্রী লক্ষীর ভান্ডার করেছেন, বিধবা ভাতা করেছেন। ওনারও তো দায়বদ্ধতা আছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের জন্য পুর বাজেট পেশ হতে চলেছে ১৭ তারিখ এবং বাজেট নিয়ে আলোচনা হবে ১৯ ও ২০ তারিখে। তারপরেই বোঝা যাবে, কেন্দ্রের একশো দিনের বকেয়ার টাকা মিটিয়ে দিয়েও রাজ্য সরকার তার ভোটমুখী সামাজিক প্রকল্পগুলির জন্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ কতটা বাড়াচ্ছে।