পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মেয়ে হওয়ার মাশুল দিল এক সদ্যোজাত। নিজের বাবা-মায়ের হাতেই খুন হতে হল তাকে। মাত্র চারমাসের মেয়েকে দেওয়ালে আছড়ে মেরে খুন দম্পতির। নৃশংস, অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের ডোমকলের ভাতশালা গ্রামে। পুলিশ সূত্রে খবর, সদ্যোজাতের নাম খাদিজা খাতুন। বাবা-মা রিন্টু মণ্ডল ও বেলুয়ারা বিবির এর আগে দুটি কন্যাসন্তান হয়েছে। তাই তৃতীয়বারেও কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায় তাদের সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ে সদ্যোজাতের উপরে। পুত্রসন্তান না হওয়ায় চারমাসের শিশুকে আছড়ে মেরে ফেললো খোদ বাবা-মা।
এমনকি এখানেই শেষ নয়, মৃত্যু নিশ্চিত করতে ঘরের মধ্যে সদ্যোজাতকে ফেলে রেখে দেয় তারা। চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয় একরত্তির। ঘটনার সময় পরিবারেরই এক সদস্য দেখে ফেলে রক্তাক্ত শিশুর দেহ। তিনিই দ্রুত খবর দেওয়া হয় বাকি সকলকে। ঘটনা চাউর হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। মৃত শিশুর ঠাকুমা ফিরোজা বিবি জানিয়েছেন, ছেলে নেশা করে। বৌ আর ছেলের মধ্যে রোজ ঝামেলা হয়। রবিবারও ঝামেলা হয়েছিল। সেই সময় দুজনের মধ্যে কেউ একজন মেরে ফেলেছে। পুলিশ এসে দুজনকে নিয়ে গেছে।
এই ঘটনাটি চরিত্রগুলি হচ্ছে মুসলিম। অথচ ইসলামে নির্দেশ হচ্ছে, কন্যা সন্তানকেও পুত্রের মতো স্নেহ ও ভালোবাসার মাধ্যমে লালন পালন করতে হবে। আর দারিদ্রতার জন্য বা অন্য কোনও কারণে কন্যা সন্তানকে হত্যা করা ইসলামে নিষিদ্ধ ও ভয়ানক গুনাহ হিসেবে বিবেচিত। তাই কন্যা সন্তান হলে সারা বিশ্ব ব্যাপী মুসলিম ঘরে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। মুহাম্মদ সা. বলেছেন, কেউ যদি ৩ জন কন্যা সন্তানকে ভালোভাবে মানুষ করে তবে সে জান্নাতে যাবে। সাহাবারা জিজ্ঞাসা করেন, যদি কন্যা সন্তান ২ জন বা ১ জন হয়, প্রফেট বলেন তাহলেও তারা জান্নাতে যাবে।
দেখা যাচ্ছে, মুর্শিদাবাদ-সহ পশ্চিমবঙ্গের বহু জেলাতেই নবী সা.-এর বাণী ও ইসলামের শিক্ষাকে সঠিকভাবে প্রচার করা হয় না, সচেতনতা সৃষ্টি করা হয় না। তাই তারা মদ ও হেরোইন জাতীয় নেশা দ্রব্যে আসক্ত হয়ে পড়ে। আর নেশাখোরদের বিবেক বলে কোনও কিছুই থাকে না। এই বিষয়গুলিতে মসজিদের ইমাম সাহেব ও সমাজকর্মীদেরও বড় দায়িত্ব রয়েছে।