মোল্লা জসিমউদ্দিন: বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে পুলিশি নিস্কিয়তা নিয়ে মামলার শুনানি চলে। এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলার শুনানিতে ফের প্রশ্নের মুখে পড়লো কলকাতা পুলিশ। এদিন এজলাসে বসেই সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী অফিসারকে আইনের বই খুলে ধারা প্রয়োগের পাঠ পড়ালেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সেনগুপ্ত। কলকাতার আর্মহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকায় গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। স্বামীর বিরুদ্ধে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ তোলে নিহতের পরিবার।কিন্তু ওই থানার পুলিশ গুরতর অভিযোগে লঘু ধারায় মামলা রুজু করেছে বলে, কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নিহতের পরিবার। এদিন এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এজলাসে পুলিশ কে প্রশ্ন করে বলেন, “তদন্ত আইনের পথে হবে, নাকি অভিযুক্তর দেখানো পথে ?”
উল্লেখ্য, গত ২৪ নভেম্বর শ্বশুরবাড়ি থেকে এক মহিলার অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, বাড়ির বাথরুমের দরজা ভেঙে বাইরে বের করে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন তাঁর স্বামী। সেই দৃশ্য নিহতের দিদিকে ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে দেখানো হয় বলে অভিযোগ। দিদির দাবি, ‘তিনি কালীঘাট থেকে গাড়ি নিয়ে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ বোন কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়’। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, ‘এই ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামীর মোবাইল ফোন, শালিনীর জামা কাপড় এবং বাথরুমের দরজা বাজেয়াপ্ত করেনি তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। পরিবারের দাবি, নিহত স্ত্রী এবং তাঁর শ্বশুরে নামে কেনা ফ্ল্যাট অভিযুক্ত স্বামী তাঁর নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তা নিয়েই বিবাদ। আর তা না মানাতেই আগুনে পুড়িয়ে খুন করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।মৃত্যুর আগে ওই মহিলা কে নানা অপবাদ শ্বশুরবাড়ির তরফ থেকে দেওয়া হত। মানসিক ও শারীরিক নানান নির্যাতন চলতো।
নিহত পরিবারের অভিযোগ, ‘এই মামলায় বিয়ের সাত বছরের মধ্যে পণের দাবিতে অত্যাচার এবং সেই কারণে মৃত্যু, এই ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। কিন্তু অভিযোগ, খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের করলেও খুনের ধারা দেয়নি পুলিশ। সাত বছরের বেশি আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। এই ধারা এই মামলায় কীভাবে প্রযোজ্য? সেই প্রশ্ন তোলে পরিবার। সেই মামলার শুনানিতে পুলিশ আবারও এদিন আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে। মামলাকারী আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় জানান, “সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী পুলিশ অফিসার অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে গুরতর অভিযোগে ধারা না এনে লঘু ধারা দিয়ে পক্ষান্তরে মামলার তদন্তের অভিমুখ পরিবর্তনের চেস্টা করেছেন।” এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাস এই মামলার তদন্তভার রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি-র হাতে দেয়। এখন দেখার সিআইডি এই মামলার তদন্তে আদালত কে কি জানায়?