মোল্লা জসিমউদ্দিন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে আইনী জট কেটেও যেন কাটছেনা। আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া একপ্রকার থমকে। গত বুধবারের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এর প্রকাশিত ২০২২ এর প্যানেল সংক্রান্ত নোটিফিকেশনকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করার আবেদন জানানো হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে। সুমন্ত কোলে-সহ ১০ জন আবেদন করেছেন। মামলা করার অনুমতি দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার। সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ রয়েছে, ‘বিএড ডিগ্রি নিয়োগের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য না হলেও, ডিএলএড ডিগ্রির চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ করা যাবে’। তবে মামলাকারীদের বিএড এবং ডিএলএড দুই ডিগ্রিই রয়েছে।মামলাকারীদের দাবি, ‘বিএড গ্রহণ না হলেও ডিএলএড ডিগ্রিকে গুরুত্ব দিয়ে কেন তাঁদের প্যানেলে যুক্ত করা হল না?’ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মামলাকারীরা। আজ অর্থাৎ শুক্রবার এই মামলার শুনানি রয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে গত ৩১ জানুয়ারি ২০২২ সালের নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ১১ হাজার ৭৫৮টি শূন্যপদের মধ্যে ৯ হাজার ৫৩৩ পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে গত বুধবার। দ্রুত তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হবে বলে পর্ষদের তরফ থেকে জানানো হয়।প্রাথমিকের ২০২২ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেয় সুপ্রিম কোর্ট। নির্দেশে বলা হয়, ১১ হাজার ৭৫৮ শূন্যপদে নিয়োগ করা যাবে। রাজ্য ৯ হাজার ৫৩৩ পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সুপ্রিম কোর্ট এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে, ‘বিএড ডিগ্রি না থাকলেও ডিএলএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের নিয়োগ করা যাবে’।
তবে মামলাকারীদের দাবি, ‘ডিএলএড ডিগ্রি থাকলেও তাঁদের নাম কেন নেই’। সেই বিষয়টি প্রশ্ন তুলেই মামলা করেন তাঁরা। ২০২২ সালে প্রাথমিকে নিয়োগের জন্য যে টেট পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল তা গত বুধবার তার মেধাতালিকা প্রকাশ পেয়েছে। ১১ হাজার ৭৫৮টি শূন্যপদের মধ্যে ৯ হাজার ৫৩৩ পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে। তার নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু এই নিয়োগের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ফের নতুন মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে।গত বুধবার এই প্যানেল প্রকাশের পর পর্ষদ জানিয়েছে, ‘আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগ হবে ৯ হাজার ৫৩৩ জনের’। এখন নতুন করে মামলা হওয়ায় আবার একবার এই নিয়োগ নিয়ে জটিলতা তৈরি হল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। চলতি সপ্তাহে গত মঙ্গলবার প্রাথমিকের ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেয় সুপ্রিম কোর্ট।
এই সংক্রান্ত মামলায় রায় দিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, ‘ডিএলএড ডিগ্রির চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ করতে হবে’। তবে এক্ষেত্রে বিএড এবং ডিএলএড দুই ডিগ্রি থাকা চাকরিপ্রার্থীরাই আদালতের দ্বারস্থ। বিএড গ্রহণ না হলেও ডিএলএড ডিগ্রিকে গুরুত্ব দিয়ে কেন তাদের প্যানেলে যুক্ত করা হল না? এই প্রশ্ন তুলে মামলা দায়ের হয়েছে। আজ অর্থাৎ শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে এই মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিচার্য বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত মামলার বিচারের ভার বিচারপতি রাজশেখর মান্থার কে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।