পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: অযোধ্যায় কনকনে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করেই আট থেকে আশির ভিড় রাম মন্দির চত্বরে। গেট খুলতেই উপচে পড়ল ভক্তদের ঢল। কারুর কোলে শিশু তো, অশীতিপর বৃদ্ধ সকলেই ছুটছেন রামালালাকে একবার দর্শনের জন্য। ভোর তিনটেতেই ভক্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়ালো। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হল যোগী রাজ্যের পুলিশকে। দেখা গেছে একটি সামান্য দড়ি দিয়ে সেই ভিড় আটকানোর প্রাণপণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। আর কোনও বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে এগিয়ে যাচ্ছে ভক্তরা। কার্যত রাম মন্দির উদ্বোধনের পরের দিনই বিশৃঙ্খলা তৈরি হল। ভিড় সামলাতে নামানো হল সেনা, কমব্যাট ফোর্স। পদপিষ্ট হওয়ার পরিস্থিতি আটকাতে দর্শনার্থীদের বসে পড়ার আবেদন জানায় পুলিশ। প্রায় ঘণ্টাখানেক বন্ধ থাকার পর ফের খোলা হয় মন্দিরের দরজা। সরু লাইন করে ধীরে ধীরে দর্শনার্থীদের মন্দিরে ঢোকানো শুরু করে পুলিশ। মন্দিরের মূল দরজার সামনে মোতায়েন করা হয়েছে অ্যান্টি টেররিস্ট ভেহিকল। ভিড়ের চাপে ধাক্কাধাক্কিতে বেশ কয়েকজন পড়ে গিয়ে আহত হন। মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা গোপাল কৃষ্ণ নামে এক ব্যক্তি ধাক্কা খেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে যান। এদিকে রাম মন্দিরের প্রবেশ দ্বার সাজিয়ে তোলা হয়েছে ফুল ও আলো দিয়ে। সেখানেও চলেছে ভক্তদের সেলফি তোলার ধুম। সব দিক সামলাতে গিয়ে হিমশিম খায় পুলিশ। রাম ভক্তদের উন্মাদনা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, অযোধ্যার প্রায় সব রাস্তাই অবরুদ্ধ হয়ে যায়। কার্যত বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচলও।
মনোজ ভার্মা নামে পঞ্জাব থেকে আসা এক ব্যক্তি জানান, ‘রামলালার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। খুব আনন্দ পেয়েছি। লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। আমাদের পূর্বপুরুষরা এর জন্য সংগ্রাম করেছিলেন, এটি ফলপ্রসূ হয়েছে’। বিহারের মাধেপুরার বাসিন্দা নীতিশ কুমার ৬০০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে অযোধ্যায় এসেছেন। নীতিশ বলেন, ‘আমি জানি খুব ভিড় হবে, কিন্তু আজ আমি রামলালার দর্শন করবই। তবেই আমার জীবন সার্থক হবে’। ছত্তিশগড় থেকে আট সদস্যের দল নিয়ে হেঁটে অযোধ্যায় এসেছেন সুনীল মাধো। ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে একটি প্রবেশ দ্বার দিয়ে কিভাবে এতগুলো মানুষকে একসঙ্গে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হল? যদি কোনও বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেত তাহলে তার দায়ভার কে নিত?
মঙ্গলবার সূচি অনুযায়ী, সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা এবং দুপুর ৩টে থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মিলবে রামলালার দর্শন। কার্যত এর পরেই ভক্তদের ঢল নামে। ভোর রাত থেকে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে দিতে প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হতে থাকে স্থানীয় মানুষ। গেট খুলতেই হুড়মুড়িয়ে ঢুকতে থাকে তারা।
২২ জানুয়ারি গর্ভগৃহে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয় রামলালার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে এই মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী থেকেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। উদ্বোধনী ভাষণে মোদি বলেন, এই নয়া কালের সূচনা হল।