পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার লাইভ সম্প্রচারে বাধা নয়, তামিলনাড়ু সরকারকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। উল্লেখ্য, ‘রাম মন্দিরের সরাসরি সম্প্রচার নিষিদ্ধ করেছে তামিলনাড়ু সরকার, এই অভিযোগই আনেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। পাশাপাশি শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন চেন্নাইয়ের বাসিন্দা বিনোজ। এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তামিলনাড়ু সরকারকে সোমবার নোটিশ ধরিয়েছে শীর্ষ আদালত। রামমন্দিরের উদ্বোধন, পুজো-অর্চনার সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করা যাবে না বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
নোটিশে বলা হয়েছে, যদি তামিলনাড়ু সরকার এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে থাকে, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রকৃত কারণ জানাতে হবে। এদিকে স্ট্যালিন সরকার জানিয়েছে, রামমন্দির উদ্বোধনের সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করার অভিযোগ সঠিক নয়, কোনও রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি।
সোমবার শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। জরুরি ভিত্তিতে শুনানি চলে। তাতে অভিযোগ করা হয়, মৌখিক ভাবে তামিলনাড়ুতে রামমন্দির থেকে সরাসরি সম্প্রচার, বিশেষ পুজো, অর্চনা, ভজনের আয়োজন করতে বারণ করা হয়েছে। রিলায়্যান্সের তরফে সেই নিয়ে বেশ কিছু নথিপত্রও শীর্ষ আদালতে জমা দেওয়া হয়। আবেদনকারীর আইনজীবী দামা শেষাদ্রি নায়ডু আদালতে বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল ধর্মকে ঘৃণা করে। ক্ষমতায় এসে সেই দল চাইছে, সরকারও ধর্মকে ঘৃণা করুক।” বিচারপতি খান্না বলেন, ‘যদি মৌখিক ভাবে এমন কোনও নির্দেশ দেওয়াও হয়ে থাকে, তা সরকারি নির্দেশ বলে ধরা হয় না। তা মেনে চলার বাধ্যবাধকতাও নেই।
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, মন্দিরে বসানো লেইডি স্ক্রিন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিছু থানা থেকেও সেই মর্মে নির্দেশ গিয়েছে। এ নিয়ে শীর্ষ আদালত বিবেচনা করুক। বিচারপতি খান্না জানান, এটা সাধারণ নির্দেশ। কেউ অনুমতি চাইলে বা আবেদন জানালে, আইন অনুযায়ীই পদক্ষেপ করা উচিত।
বিচারপতি দত্ত রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেলকে প্রশ্ন করেন, সংখ্যালঘুরা কাছাকাছি এলাকায় বসবাস করে, এর ভিত্তিতে রাজ্য কর্তৃপক্ষ পুজো এবং অন্যান্য উদযাপনের জন্য আবেদনগুলি প্রত্যাখ্যান করতে পারে না। আমরা এক ঐক্যবদ্ধ সমাজে বাস করি। কোনও রকম নিষেধাজ্ঞা কাম্য নয়।”
তামিলনাড়ু সরকার আদালতে জানায়, রামমন্দিরের উদ্বোধন, প্রাণ প্রতিষ্ঠা, সেই উপলক্ষে রাজ্যে বিশেষ পুজো-অর্চনা, ভজনে কোনও রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি।
এদিকে মসজিদের কাছে এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন কি কাম্য? প্রশ্ন তোলেন তামিলনাড়ু সরকারের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল। প্রশ্নের উত্তরে আদালত জানায়, শুধুমাত্র এই কারণে অনুমতি বাতিল করা যায় না। বরং সরকারের উচিৎ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা। এই যুক্তি দেখিয়ে অনুমতি বাতিল করলে পরবর্তীতে সমস্যায় পড়তে হতে পারে সরকারকে।
আগামী সোমবার, ২৯ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।