পুবের কলম প্রতিবেদক, বসিরহাট: বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের একদা তৃণমূলের দুই নেতা- একজন শেখ শাহাজান, অন্যদিকে বাবু মাস্টার। যখন এক নেতার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না, তখন অন্য আর এক নেতা জনজোয়ারে ভাসছেন। সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শেখ শাহজাহানের আত্মগোপন নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। ঠিক সেসময় তৃণমূলের দলত্যাগী জননেতা তথা উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ ব্লকের আমলানী গ্রাম পঞ্চায়েতের তালপুকুরের বাবু মাস্টারকে দেখামাত্রই জনগণের উচ্ছ্বাস।
সম্প্রতি তালপুকুরের ব্যবসায়ী সেলিম গাজীর আমন্ত্রণে ফিরোজ কামাল গাজী ওরফে বাবু মাস্টার উপস্থিত হয়েছিলেন।নিজে হাতেই মিষ্টি মুখ করান অনুগামীদের। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন- সেলিম আমার ছোট ভাই এর মতো।দীর্ঘদিনের পরিচিত। তার আমন্ত্রণে সাড়া না দিয়ে থাকতে পারলাম না। রাজনীতির আঙিনায় না থাকলেও সৌজন্যতাবোধ ভোলা যায় না।
তিনি আরো বলেন- মানুষ আমাকে এখনো এত ভালবাসে সত্যিই আমি অভিভূত।এদিন তাকে দেখামাত্রই হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসায় রাজ পথে জনজোয়ার তৈরি হয়। পাশাপাশি এদিন আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মাখালগাছা গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য আবুল কালাম, মোস্তফা মন্ডল , এবাদুল গাজী, আমলানী গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা তাপসী মন্ডল ,নুরুজ্জামান গাজী সহ বিশিষ্টরা।তবে প্রশ্ন উঠেছে ,বাবু মাস্টার কি আবার রাজনীতির আঙ্গিনায় ফিরবেন ? নাকি শ্রেফ সমাজসেবী হিসেবে কাজ করবেন।যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
তবে এ বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন- ইচ্ছা আছে, রাজনৈতিকভাবে পথ চলার।তবে সময় ও পরিস্থিতিই বলে দেবে কখন কি করতে হবে। বলাবাহুল্য, এই বাবু মাস্টারকে সিপিএমের ২০১১ সাল পর্যন্ত হাসনাবাদ ভবানীপুরে সিপিআইএমের লোকাল কমিটির মেম্বার রেখেছিল।রাজ্যের পালাবদল হওয়ার পর ২০১৩ সালে বাবু মাস্টার তৃণমূলে যোগদান করেন বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত ধরে।
২০১৮ সালে জেলা পরিষদের তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। তারপর থেকে তার আর ফিরে তাকাতে হয়নি। সেখান থেকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ হন। ২০১৯ সালে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের কনভেনারের দায়িত্ব পান। তারপর দল তাকে টিকিট দেবে না সে কথা জানতে পেরে তিনি দলের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে দলবদলের সিদ্ধান্ত নেন। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে অমিত শাহ , কৈলাস বিজয়বার্গীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেন। আশা ছিল ২১ সালে বিধানসভা ভোটে বসিরহাট উত্তর থেকে বিধানসভার প্রার্থী হবেন । সেখানেও টিকিট না পাওয়ার জন্য তিনি বিজেপি সঙ্গ ত্যাগ করেন। এখন তিনি অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। কিন্তু এলাকায় তার প্রভাব আজও একই জায়গায় রয়ে গেছে।