পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সমাজ ক্রমশই অস্থিরতা, নৃশংসতার সাক্ষী থাকছে। শৈশবও অনেক ক্ষেত্রেই সেই হাতছানিতে পা দিচ্ছে। বন্ধুদের মধ্যে মজা, অভিমান, ঝগড়া কখন যে মারাত্মক পরিণতি নিচ্ছে নিজেরাই তা বুঝে উঠতে পারছে না। এইভাবে তরুণ সমাজ এক ভয়ঙ্কর ঝুঁকির মুখোমুখি হয়ে অপরাধ জগতে পা রাখছে।
খুব সাধারণ একটি গেম খেলা নিয়ে বন্ধুদের মধ্যে ঝগড়া। সেই বিবাদের জেরে বন্ধুকে নৃশংসভাবে খুনের পর দেহ পোড়ানোর অভিযোগ ৪ নাবালকের বিরুদ্ধে। মুর্শিদাবাদের হাড়হিম করা ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মৃত বালকের নাম পাপাই দাস (১৭)। মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা ব্যারেজ আবাসনের বাসিন্দা ছিল পাপাই। ৮ জানুয়ারি থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ১১ জানুয়ারি পরিবারের তরফে পুলিশে ডাইরি করা হয়। গত ১৫ জানুয়ারি পাপাইয়ের দেহ উদ্ধার হয় ফরাক্কা ব্যারেজে নিশিন্দ্রা ঘাট ফিডার ঘাট সংলগ্ন জঙ্গল থেকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাপাই সহ তার চার বন্ধুর নাম অনিক কর্মকার, রৌশন জমাদার, আব্বাস সেখ ও শুভজিৎ মাজি- এই পাঁচজনেরই মোবাইল গেমে প্রচণ্ড আসক্তি ছিল। অভিযুক্তদের কারোর বয়স তেরো, কারোর বয়স ষোলো। চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। মৃতের চার বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। বয়ানে তারা জানিয়েছে, অনিকের কাছ থেকে একটি ফ্রি ফায়ারের আইডি ২ হাজার টাকার বিনিময়ে কিনেছিল পাপাই। কিছুদিন পর অনিক আবার খেলার জন্য ওই ফ্রি আই ডি পাপাইয়ের কাছ থেকে নেয়। কিন্তু পরবর্তীতে পাপাই সেই ফ্রি আইডি চাইলে অনিক আর সেটি দেয়নি বলে অভিযোগ। এবং অনিক, রৌশন ও আব্বাসের সহযোগিতায় সেই ফ্রি আই ডি নিজেদের নামে করে নেয়। আর তা নিয়েই শুরু হয় পাপাইয়ের সঙ্গে চার বন্ধুর ঝামেলা।
ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাথর মা পূর্ণিমা দাস। পুলিশকে পূর্ণিমাদেবী জানিয়েছেন, ওরা পাঁচ বন্ধু মোবাইল নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকত। এই নিয়ে বাড়িতে বকাবকি করতাম। কিন্তু সেই মোবাইলের কারণে ছেলে খুন হতে হবে ভাবতে পারিনি। দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই আমি।