বিশেষ প্রতিবেদন: আধুনিক সভ্যতার তলায় চাপা পড়ে আছে এক অন্য প্রাচীন পৃথিবী। আপাতত দৃষ্টিতে সেই বিস্ময়কর এক জগৎ দুনিয়ার সামনে এসে ধরা পড়েছে। আমাজনের গহীন অরণ্যে একটা আস্ত শহর থাকতে পারে! যা দেখে নিজেরাই তাজ্জব বনে গেছেন গবেষকরা। আমাজনের গহীন অরণ্যে হারিয়ে যাওয়ার সভ্যতার খোঁজ পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। ২০০০ বছরেরও বেশি পুরনো শহরের অনুসন্ধান করেছেন তারা। প্রত্নতাত্ত্বিক স্টিফেন রোস্টেইন এই শহরের হদিশ পান। বৃহস্পতিবার সায়েন্স জার্নালে অনুসন্ধানের বিষয়টি সামনে আসে।এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ, জোসে ইরিয়ার্ত, আমাজনকে প্রায়শই একটি “প্রাথমিক মরুভূমি বলে মনে করা হয় যেখানে শুধুমাত্র ছোট গোষ্ঠীর লোক রয়েছে৷ কিন্তু সাম্প্রতিক আবিষ্কারগুলি আমাদের দেখিয়েছে যে অতীত আসলে কতটা জটিল।’ রোস্টেইন আরও বলেন, আমাজনে সবসময় মানুষ এবং বসতিগুলির একটি অবিশ্বাস্য বৈচিত্র্য রয়েছে, শুধুমাত্র বেঁচে থাকার একটি উপায় নয়, আমরা তাদের সম্পর্কে আরও শিখছি।”
সম্প্রতি ত্রিমাত্রিক ছবিতে পুরনো শহরের এই অস্তিত্ব ধরা পড়েছে। এখনও পর্যন্ত গবেষকদের ধারণা সড়কপথে ও ছোট ছোট খালের মাধ্যমে অন্য বড় শহরগুলির সঙ্গেই শহরটি যুক্ত ছিল। আবিষ্কৃত এই শহরটি মূলত কৃষি সভ্যতা ভিত্তিক ছিল। কৃষিকাজই ছিল এখকার মানুষের পেশা। এই শহরে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল।
প্রাচীন লাতিন আমেরিকার নগর সভ্যতার সাদৃশ্য খুঁজে পাচ্ছেন তারা। ২ হাজার বছরের বেশি সময়ের পুরনো এই শহরটিতে
দোকান-বাজার, মাঠ সব কিছু ছিল।
আধুনিক লেজার সেন্সর প্রযুক্তির সাহায্যে ইকুয়েডরের পূর্বে, আন্দিজ পর্বতমালার পাদদেশে উপানো উপত্যকা অঞ্চলে এই হারিয়ে যাওয়া শহরটি আবিষ্কৃত হয়েছে, যার আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গকিলোমিটারের কাছাকাছি। শহরের আয়তন দেখে ঐতিহাসিকদের অনুমান ১৫ থেকে ২৫ হাজার মানুষের বসবাস ছিল সেই সময়কার এই জনপদে। তবে এই আবিষ্কারের আগেও
এই আমাজন অঞ্চলে বেশ কিছু পিরামিড এবং স্থাপত্যের নিদর্শন মিলেছে, যা আমাজন অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের ইতিহাস এবং প্রাকৃতিক অবস্থাকে জানতে সাহায্য করবে।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, এই সভ্যতা কিলামপে ও উপানো সংস্কৃতিকে ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছিল। তবে পরবর্তীতে হুয়াপুলা সংস্কৃতি এই নগর সভ্যতাকে প্রভাবিত করেছিল এই শহরের রাস্তাঘাট কিংবা নিকাশি ব্যবস্থা নকশা দেখে সেটাই মনে হয়। মাটির টিলার উপর মিলেছে আবাস কক্ষ এবং ঘর বাড়িও। এই শহরের অধিকাংশ জায়গা জুড়েই ছিল কৃষিক্ষেত্র। প্রায় ১০ হাজারের বেশি মানুষের বসবাস ছিল।