পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক:
বিএসএফের দক্ষিণ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের জওয়ানরা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মৌমাছি প্রতিপালন ও মিশন মধু পরীক্ষা এবং ওষধি গাছের চারা রোপনের একটি অগ্রণী প্রকল্প শুরু করেছে । যা মৌমাছি পালন এবং মিশন মধুকে প্রচার করবে । ‘ভাইব্রেন্ট ভিলেজ প্রোগ্রাম’-এর আওতায় সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এই প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে । শুধু তাই নয়, তাদের আশা সীমান্তে চোরাচালান ও অনুপ্রবেশ রুখতেও মৌমাছি প্রতিপালন কাজে আসবে ৷
গবাদি পশু এবং মাদকদ্রব্যের চোরাচালান রোধ করতে, বিএসএফ-এর কাছে এখন প্রতিরোধের দ্বিতীয় লাইন থাকবে — ৬০,০০০-এরও বেশি ঔষধি গাছ এবং ৪০টি মৌমাছির বাক্সের মোটা হেজ পশ্চিমবঙ্গের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নদিয়া জেলায় তিন কিলোমিটার বেড়াযুক্ত প্রসারিত অংশে তা থাকবে।
ফুল ও ফলের গাছগুলি মৌমাছিদের পরাগায়নের জন্য একটি বাস্তুতন্ত্রও তৈরি করবে বলে আয়ুষ বিভাগের একজন সিনিয়র আধিকারিক জানিয়েছেন।
এ জন্যে যাবতীয় খরচ দেবে সরকার ৷ এতে গ্রামবাসীদের স্বনির্ভর হওয়ার পাশাপাশি সীমান্তের নিরাপত্তায় মৌমাছিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলেই দাবি বিএসএফের ৷
বিএসএফ সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় মৌমাছির ৪০টি বাক্স স্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা সেই মৌমাছির দেখভালের পাশাপাশি মধু সংগ্রহ করবেন । এতে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন গ্রামবাসীরাই । এই বিষয়ে দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের বিএসএফ জনসংযোগ আধিকারিক ডিআইজি একে আর্য্য জানিয়েছেন, এই প্রকল্প সফল হলে আগামী দিনে দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তজুড়ে কাঁটাতারে মৌমাছির বাক্স স্থাপন করা হবে । তবে, এই মুহূর্তে ২০০ বাক্স স্থাপনের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে ।
এই প্রকল্পের আওতায় সীমান্তের বেড়ার কাছে কৌশলগতভাবে মৌমাছির বাক্স স্থাপন করা হয়েছে । সীমান্ত বেড়ার কাছে মৌমাছির বাক্সগুলো মাটির সামান্য উপরে রেখে, তার কাছাকাছি মৌমাছি-বান্ধব ফল ও ফুলের গাছ স্থাপন করা হয় ।বাক্সগুলোকে প্রাকৃতিক ছায়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে । যাতে মৌমাছিদের আকর্ষণের একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয় । এর ফলে সীমান্তের বেড়া দিয়ে অনুপ্রবেশ এবং চোরাচালানকারীদের প্রতিরোধে সহায়তা হতে পারে । সীমান্তের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন এবং চোরাপ্রবেশ রোধে মৌমাছিরাও কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে তা প্রমাণ করতে ধারাবাহিকভাবে মৌমাছির বাক্স স্থাপনের প্রচেষ্টা চলছে ।ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত অঞ্চলটি উভয়পক্ষের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য এবং ঘন বনের জন্য পরিচিত । অতিরিক্তভাবে, স্থানীয় কৃষকরা নিবিড় কৃষিতে নিযুক্ত থাকেন । যাতে সারাবছর ধরে মৌমাছির জন্য খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে । গ্রামবাসীদের সরিষা চাষ ও বিভিন্ন ফুলের গাছ রোপণে উৎসাহিত করা হয়েছে । যা মৌমাছির সরবরাহে আরও সহায়তা করবে । প্রকল্পের সাফল্য নিশ্চিত করতে, গ্রামবাসীরা মধু মৌমাছি পালন এবং তাদের নিশ্চিত বিকাশের জন্য এর ক্ষমতা সম্পর্কে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে ।