পুবের কলম প্রতিবেদকঃ সন্দেশখালির ঘটনার জের। লোকসভা ভোটের নির্বাচনী নির্ঘন্ট প্রকাশের আগেই মিডিয়া মনিটরিং শুরু করে দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। জানা গিয়েছে, সিইও অফিস নয়, সম্প্রতি সন্দেশখালিতে ঘটে যাওয়া ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ সব তথ্য ভিডিওগ্রাফি সমেত নিজেদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমেই যোগাড় করে ফেলেছিল নির্বাচন কমিশন। এরপরেই এই পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে এই প্রথমবার নির্বাচনী নির্ঘন্ট প্রকাশ হওয়ার এত আগে থেকে মিডিয়া মনিটরিং শুরু করে দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
জানা গিয়েছে, বৈদ্যুতিন মাধ্যম, খবরের কাগজ এবং ডিজিট্যাল মিডিয়ায় রাজ্যে প্রতিদিন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কি খবর হচ্ছে, তার সবিস্তার রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কলকাতা উত্তর এবং কলকাতা দক্ষিণ সহ রাজ্যের মোট ২৪টি জেলার রিপোর্ট পাঠানো শুরু হল বুধবার থেকেই। শুধুমাত্র তাই নয়, রীতিমতো জাতীয় নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট করে দিয়েছে মোট সাতটি পয়েন্ট। যার মধ্যে উল্লেখ করা রয়েছে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ফেক নিউজ সহ অন্যান্য আরও অনেকগুলি বিষয়। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ববৃন্দ কখন কোথায় কে কি বলছে সেটাও বিস্তারিতভাবে পাঠাতে হবে নির্বাচন কমিশনে।
নির্বাচন কমিশনের কাছে এর আগে এতদিন এইসব রিপোর্ট পাঠাতে হতো নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পর থেকে কিন্তু, এই প্রথমবার নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে এত আগে থেকে করা হচ্ছে নজরদারি। সূত্রের খবর, জাতীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এবং সম্পূর্ণ রিপোর্ট হাতে নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচনের সময় নির্বাচনী বিধি লাগু হওয়ার পর এতদিন ধরে বা এতবছর ধরে যে রিপোর্ট পাঠাতো রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর বুধবার থেকে সেই রিপোর্ট এবার পাঠাতে হবে প্রতিদিন। এই রিপোর্ট পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনও ছুটি থাকছে না। এমনকি জাতীয় ছুটির দিনেও এই রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ ইতিমধ্যেই অন্ধ্রপ্রদেশে রয়েছে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব মঙ্গলবার দিনই দিল্লি গিয়েছেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করতে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ অথবা ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহেই রাজ্যে আসতে চলেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। যদিও রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর থেকে ইতিমধ্যেই সব জেলা থেকে রিপোর্ট নেওয়া শুরু করা হয়েছে। যে সমস্ত এলাকায় উত্তেজনাপ্রবণ বুথ রয়েছে, তার জন্য এখন থেকেই জেলা নির্বাচনে আধিকারিকরা কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সেই সব কিছুই জানতে চাওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে জামিন অযোগ্য ধারায় যারা এখনো পর্যন্ত এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদেরকে নিজেদের আওতার মধ্যে রাখার ক্ষেত্রে জাতীয় নির্বাচন কমিশন এবার বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে।
নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পর আর কোনওভাবেই যাতে তারা বাইরে থাকতে না পারে সে বিষয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সহ প্রত্যেক জেলার জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের কড়া নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যে এখনও পর্যন্ত আশি হাজারের বেশি বুথ রয়েছে যার মধ্যে ৪৭ শতাংশ বুথ শ্যাডোজোনের মধ্যে রয়েছে। যেখানে এখনও পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। জাতীয় নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, যে কোন মূল্যে ১০০ শতাংশ বুথেই এবার ব্রেক কাস্টিং করা হতে পারে।