পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ ২৫ দিনে মৃত্যু ১৩ জন গ্রামবাসীর। ডেঙ্গুর আতঙ্ক ছড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশের কানপুরনাগোর জেলার কুরসৌলি গ্রামে। ১৫ দিনেই ১১ জন মানুষের মৃত্যু হয়। তার পর থেকে ক্রমশই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। রেহাই পাচ্ছে না তরুণ থেকে বৃদ্ধ। জ্বর নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩০ জন।
চারদিকে এতটাই আতঙ্ক ছড়িয়েছে যে গ্রামের মানুষ দরজা-জানলা বন্ধ করে ঘরের মধ্যেই রয়েছেন। গ্রামে রাস্তায় কোনও লোকজনের দেখা নেই। চারদিকে শুধুই শ্মশানের নিস্তব্ধতা। স্থানীয় মানুষের দাবি, যারা অসুস্থ হচ্ছে, প্রত্যেকেরই জ্বর হয়েছিল। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হচ্ছে।
এদিকে জেলার স্বাস্থ্য অধিকর্তার দাবি তাদের কাছে এখনও ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে বলে কোনও তথ্য নেই।
সুনীল প্রজাপতি বলে গ্রামের এক স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন, তার ভাইয়ের মেয়ের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। তবে কোনও পরীক্ষা হয়নি। ভাইও অসুস্থ হয়েছিল। এখন ভালো আছে। প্রশাসন মিথ্যা কথা বলছে। অপর এক স্থানীয়ে কথায়, গ্রামে কি হচ্ছে তা দেখতে পাচ্ছে প্রশাসন। তাও গা ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছে।
গ্রামের প্রধান অমিত সিং জানিয়েছে, তার এক আত্মীয়া মারা গেছে কয়েকদিন আগে। গোটা গ্রামও পরিষ্কার করা হয়েছে। তাও মৃত্যু থামছে না।
অবস্থা জানতে গ্রাম পরিদর্শন করেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্যআধিকারিক ডাঃ সিং ও জেলাশাসক অলোক তিওয়ারি।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্যআধিকারিক ডাঃ সিং জানান, ডেঙ্গুর কারণে গ্রামে কোনও মৃত্যু ঘটনা ঘটেনি। স্বাস্থ্যশিবির খোলা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসকরা রোগী দেখছেন। তবে শিবিরে রোগীরা খুব কমই আসছে। বেশিরভাগ মানুষ বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে ভিড় করছে।
জেলাশাসক অলোক তিওয়ারি জানিয়েছেন, বহুদিন পর্যন্ত এখান থেকে ডেঙ্গুর কোনও খবর পাওয়া যায়নি। তবে স্বাস্থ্য শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে সকলের পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এদিকে প্রশাসন ডেঙ্গুর কথা অস্বীকার করলেও শিবিরে থাকা কিছু স্বাস্থ্যকর্মীদের বক্তব্য কয়েকজনের রিপোর্টে ইতিমধ্যেই ডেঙ্গু পজিটিভ রিপোর্ট মিলেছে। এদিকে প্রশাসনের বক্তব্য, সরকারি মেডিকেল কলেজে পরীক্ষা করানো না হলে সেই রিপোর্ট গ্রহণযোগ্য হবে না।
ফার্মাসিস্ট জীতেন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই মৃত ১২ জনের রিপোর্টে ডেঙ্গু পজিটিভ এসেছে। তবে এরা সকলেই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করিয়েছিলেন। এদিকে জেলাশাসক জানিয়েছেন এই রিপোর্টগুলির কোনও বৈধতা নেই।