আজিজুল হক: ‘ইসলামের প্রচার এবং প্রসারে পুরুষদের যেমন ভূমিকা ছিল, তেমনি ভূমিকা ছিল নারীদেরও। তা আজও রয়েছে। মেয়েদের কুরবানিতে ইসলাম দীপ্তি পেয়েছে। আর্থিক এবং মানসিক দিক দিয়ে ইসলামের প্রচার-প্রসার এবং প্রতিষ্ঠায় অনন্য ভূমিকা পালন করেছিলেন মা খাদিজা রা.। তিনিও একজন মহিলা এবং প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী।’
রবিবার নরেন্দ্রপুর থানার মহামায়াতলার জয়হিন্দ অডিটোরিয়ামে সারা বাংলা দ্বীনিয়াত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কথাগুলি বলেন পুবের কলম-এর সম্পাদক তথা রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান।
প্রতিটি মসজিদে সহি-সুন্দর আযান হোক, মক্তবের বাচ্চাদের সহি আযান শেখানো হোক, দ্বীনের মৌলিক জ্ঞান শেখানো, কুরআন শেখানো-আমল করা এবং অন্যদের শেখানো; এমন ৫টি লক্ষ্যকে সামনে রেখে রবিবার অনুষ্ঠিত হয় দ্বীনিয়াতের সম্মেলন। যেখানে অংশ নিয়েছিলেন মালদহ, দুই ২৪ পরগনা, বর্ধমান, হাওড়া-সহ বেশ কয়েকটি জেলার দ্বীনিয়াত সংগঠনের শিক্ষক ও পড়ুয়ারা। এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সাউথ বেঙ্গল দ্বীনিয়াত চ্যারিটেবল ট্রাস্ট।
উপস্থিত ছিলেন— অল ইন্ডিয়া দ্বীনিয়াত মোয়াজ্জাম মক্তবের মুখ্য নির্দেশক মাওলানা ফাহিম আহমেদ, আল-আমীন মিশনের সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম, আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক অধ্যাপক মাওলানা মনজুর আলম, হাওড়ার হেদায়া ফাউন্ডেশনের সম্পাদক আলহাজ্ব হায়দার আলি, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক মাওলানা মনজুর আলম কাসেমী, রাজ্য জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সম্পাদক মুফতি আবদুস সালাম, অল ইন্ডিয়া কুরআনের আলো ফাউন্ডেশন-এর সভাপতি মুফতি মুমতাজ আহমদ কাসেমী, দ্বীনিয়াতে সম্পাদক মাওলানা সাইফুদ্দিন নাদভী, বিজ্ঞানী ফারুক আহমেদ প্রমুখ।
ইসলামের প্রসারে মহিলাদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে এদিন আহমদ হাসান ইমরান বলেন, ‘মহানবী সা.-এর মুখ-নিঃসৃত হাদিসগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয়ত্ত করেছিলেন মা আয়েশা রা.। ইসলামের জন্য মেয়েদের মধ্যে প্রথম শহীদ হন সুমাইয়া রাদিয়াল্লাহু আনহা। সব মিলিয়ে ইসলামের প্রসারে মেয়েদের অবদানই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মেয়েদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ইসলাম প্রসারিত হয়।’ তৃপ্ত কণ্ঠে ইমরান সাহেব বলেন, ‘ইসলাম বা দ্বীন শেখানোর ক্ষেত্রে মক্তবের বাচ্চাদের উপস্থিতি এবং উপস্থাপনে আমি মুগ্ধ হয়েছি। শিশুরা জান্নাতের ফুল। তারা কুরআনের আলোয় আলোকিত হোক।’
আল-আমীন মিশনের সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আধুনিক শিক্ষার প্রসারে আল-আমীন মিশন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে চলেছে। তেমনি বাচ্চাদের মধ্যে দ্বীনি শিক্ষার প্রসারে দ্বীনিয়াত মক্তবও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। খাঁটি মুসলমান হতে হলে উভয় শিক্ষাই জরুরি। দুনিয়াতে আদর্শ মানুষ হয়ে উঠতে পারলে আখেরাতও সুন্দর হবে ইনশাল্লাহ্।’
জেলার মুখ্য সংগঠক হাজী খোকন সরদার জানান, ‘দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তাদের সংগঠনের ১৫০টি মক্তব রয়েছে। প্রায় ১৫ হাজার ßুñলের ছাত্র-ছাত্রী দ্বীনিয়াত শিক্ষা অর্জন করছে। তারা প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে দ্বীনের শিক্ষা নেয়।’ প্রসঙ্গত, হাজী আবদুর রফিক প্যাটেলের অনুপ্রেরণায় প্রায় ৭০ হাজার স্কুল ছাত্রছাত্রী দ্বীনিয়াত মোয়াজ্জেম মক্তবে দ্বীনের শিক্ষা অর্জন করছে।
হাজী জানে আলম সেখের সম্পাদনায় এদিন ট্রাস্টের মুখপাত্র ‘আবাবিল’ পত্রিকা প্রকাশ পায়। বিশিষ্টদের পাশাপাশি সংগঠনের দায়িত্বশীলদের মধ্যে এদিন হাজির ছিলেন– হাজী আবদুল আজীজ মণ্ডল, হাজী আবুল খায়ের, হাজী দরবেশ আলি লস্কর, হাজী খোকন সরদার, হাজী জানে আলম সেখ, হাসানুজ্জামান প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন এই এলাকার বিধায়ক ফেরদৌসী বেগম। তিনি ছাত্রছাত্রীদের দ্বীন চর্চাকে উৎসাহ দেন।