পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ভারতের কাছে একটি গৌরবের দিন। শনিবার সূর্য মিশন আদিত্য-এল-১ চূড়ান্ত কক্ষপথে প্রবেশ করবে। ৪০০ কোটি ব্যয়ে নির্মিত, প্রায় ১৫০০ কেজি স্যাটেলাইটটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে সূর্যের গতিবিধি লক্ষ্য করবে।
এই সূর্যযানটি প্রথম মহাকাশ-ভিত্তিক ভারতীয় মানমন্দির হিসাবে কাজ করবে। চার মাস আগে ইসরোর সূর্যযান শ্রীহরিকোটার লঞ্চপ্যাড থেকে তার যাত্রা শুরু করে। স্যাটেলাইটটি বিকাল ৪টের দিকে ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট ১ (এল ১) এর চারপাশে একটি হ্যালো কক্ষপথে স্থাপন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। চূড়ান্ত সন্নিবেশটি একটি সুবিধাজনক অবস্থানের জন্য একটি বাধাহীন জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে।
এই জায়গা থেকে নিরন্তর সূর্যের উপর নজর রাখা যাবে, গ্রহণ কখনওই অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে না । ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর এক অধিকর্তা বিবৃতিতে বলেছেন, “চূড়ান্ত অবস্থানে যাওয়ার ম্যানুভার আদিত্য এল ১-কে এল ১ পয়েন্টের হ্যালো অরবিটে বসিয়ে দেবে শনিবার বিকেল চারটের দিকে। আমরা যদি এই ম্যানুভার না করি তবে সে হয়তো সূর্যের দিকে এগোতেই থাকবে।”
ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ বলেছেন, “সূর্যের প্রতি সারাক্ষণ দৃষ্টি রাখবে আদিত্য এল ১। তাই সূর্যের তড়িত-চৌম্বক প্রভাব সম্পর্কে হুঁশিয়ারি দিতে পারবে যা আমাদের কৃত্রিম উপগ্রহ এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক ও যোগাযোগের মাধ্যমকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।” সোমনাথ আরও জানিয়েছেন, ৫০টি কর্মক্ষম কৃত্রিম উপগ্রহ সহ মহাকাশে ভারতের ৫০,০০০ কোটি টাকার সম্পত্তি আছে। সূর্যের রোষ থেকে তাদের নিরাপদে রাখা প্রয়োজন।
সূর্যের সবচেয়ে রহস্যময় স্তর ‘সোলার করোনা’ নিয়েই পর্যবেক্ষণ পাঠাবে আদিত্য এল-১। সূর্যের বহিস্তরের তাপমাত্রা প্রায় ১ কোটি কেলভিন, নিম্নস্তরের প্রায় ৬০০০ কেলভিন। সূর্যের পৃষ্ঠদেশে ও করোনার তাপমাত্রার ফারাক এবং করোনা থেকে ছিটকে আসা আগুনে রশ্মি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কীভাবে প্রভাব ফেলে সেটাই খুঁজে বার করবে আদিত্য এল-১। তার জন্য এই উপগ্রহে রয়েছে সাতটি সায়েন্স পে-লোড।
গত ২৩ আগস্ট চাঁদের মাটিতে সফল অবতরণ করেছিল চন্দ্রযান ৩। আজ, ৬ জানুয়ারি সেরকমই একটি দিন। উত্তেজনার পারদ চড়ছে ইসরোতে।