পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের প্রবাসী পলিটব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়া তাঁর ডেপুটি সালেহ আল-আরুরির হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিপূর্ণ সন্ত্রাসবাদ ও লেবাননের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরাইলকে মূল্য দিতে হবে। মঙ্গলবার লেবাননের রাজধানী বেইরুটের দক্ষিণ উপকণ্ঠে এক ড্রোন হামলায় হামাস নেতা আরুরি নিহত হন।
এর পরপরই ইসমাইল হানিয়া এই প্রতিক্রিয়া জানান। হামাসের রাজনৈতিক শাখার উপ-প্রধান আরুরিকে ইসরাইল-বিরোধী আল-আকসা তুফান অভিযানের ‘প্রধান স্থপতি’ বলে অভিহিত করা হয়। মঙ্গলবারের হামলায় আরুরি ছাড়াও হামাসের সামরিক বাহিনী আল-কাসসাম ব্রিগেডের দুই কমান্ডারসহ মোট ছয়জন নিহত হন।
ইসমাইল হানিয়া ওই গুপ্তহত্যার পরপরই এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘নিহত আরুরি ও তার সহকর্মীদের তাজা রক্ত গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরের হাজার হাজার নিহতের রক্তের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। এই রক্ত বৃথা যাবে না।’ হানিয়া বলেন, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কেবল হামাসের শক্তি এবং অটল সংকল্পকে আরও শক্তিশালী করবে। তিনি বলেন, ইতিহাস সাক্ষী, প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতিটি নেতার হত্যাকাণ্ডের পর এই আন্দোলন আগের চেয়ে বেশি শক্তিশালী ও দৃঢ়সংকল্প হয়ে উঠেছে। এদিকে, ফিলিস্তিনের ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের প্রধানও বেইরুটে ইসরাইলি সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে জিয়াদ আন-নাখালাহ বলেছেন, ‘শেখ সালেহ আল-আরুরি ফিলিস্তিনি জনগণের কাছে একজন বিশিষ্ট এবং নিবেদিতপ্রাণ নেতা ছিলেন। আমরা এমন সময় তাকে হারিয়েছি যখন তার উপস্থিতি আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল। তিনি এমন একজন নেতা ছিলেন যিনি তার চারপাশের মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করেছিলেন।’ এদিকে, আল-আরুরির হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা করেছে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। গোষ্ঠীটি নিজস্ব টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেছে, তাদের সেনাদের আঙুল বন্দুকের ঘোড়ায় রয়েছে। হিজবুল্লাহ বলেছে, ‘তথাকথিত ড্রোন হামলার মাধ্যমে আল-আরুরি, হামাসের অন্য দুই শীর্ষ নেতাসহ ছয়জনকে হত্যা লেবাননের ওপর একটি গুরুতর হামলা। এটিকে কোনওভাবেই বিনা প্রতিক্রিয়ায় শাস্তি ছাড়া যেতে দেওয়া যাবে নদেস
কে এই আরুরি?
আল-আরুরি হামাসের পলিটব্যুরোর উপপ্রধান ছিলেন। এ ছাড়া হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। ১৯৬৬ সালে অধিকৃত পশ্চিম তীরে জন্ম নিয়েছিলেন আরুরি। ইসরাইলি জেলে দীর্ঘ ১৫ বছর কাটানোর পর দীর্ঘসময় ধরে লেবাননে বাস করছিলেন তিনি। গত ৭ অক্টোবর দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আরুরি হামাসের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছিলেন। আমেরিকা সরকার ২০১৫ সালে আরুরিকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে এবং তাঁর খোঁজ দিতে পারলে ৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয়।