মুম্বাই, ১ জানুয়ারি: বিনিয়োগ করলে ডবল রিটার্ন, টোপ দিয়ে কোটি কোটি টাকার প্রতারণা। প্রতারণা চক্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করল মুম্বাই পুলিশের অর্থনৈতিক অপরাধ শাখা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গত জুন মাসে অভিযোগ দায়ের করেছিল প্রতারিত ব্যক্তিরা। পুলিশ জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সুরাট থেকে অভিযুক্ত দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা হলেন অশেষ মেহতা (৪১) ও শিবাঙ্গী লাড মেহতা (৩৪)।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দম্পতি ‘ব্লিস কনসালট্যান্টস’ নামে একটি শেয়ার মার্কেটের ফার্ম চালাতেন। তারা বিনিয়োগকারীদের ‘ডিআইএফএম’ নামের অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলতেন। সেই অ্যাপে তাদের রেজিস্ট্রেশন করানো হত এবং অ্যাপের মাধ্যমেই লাভাংশের অর্থ প্রদান করা হবে প্রতিশ্রুতি দিতেন দম্পতি। তাদের প্রতিশ্রুতিমত বিনিয়োগকারীরা ওই ফার্মের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিয়েছিলেন। যার পরিমান ১৭০ কোটি টাকা।
পুলিশ জানিয়েছে, শেয়ার বাজারে অর্থ বিনিয়োগ করে ডবল মুনাফা দেওয়া টোপ দেওয়া হত। বিনিয়োগকারীদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে বিভিন্ন মানুষের ছবি দেখিয়ে বলা হত তাঁরাও বিনিয়োগ করেছেন। এক মাসের মধ্যে তাদের মোটা অঙ্কের রিটার্ন দেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হত। এসব দেখে বিনিয়োগকারীরা সহজেই বিশ্বাস করে টাকা ইনভেস্ট করতেন। এই প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছেন খোদ এক প্রাক্তন বিধায়ক কৃষ্ণা হেগড়ে। তিনি বলেন, “কমিশন হিসেবে দম্পতি বলেছিলেন তাদের ফার্মের মাধ্যমে প্রাপ্ত লাভের ৩০ শতাংশ নেবে। তবে বিপুল সংখ্যক লোকের কাছ থেকে বিনিয়োগ চাওয়ার পর দুজন পালিয়ে যায়।”
প্রাক্তন বিধায়ক প্রতারণার শিকার হওয়ার পরই মুম্বাইয়ের আম্বোলি থানায় প্রতারণার মামলা দায়ের করেছিলেন। তাঁর মামলাটি পরে তদন্তের জন্য মুম্বাই পুলিশের অর্থনৈতিক অপরাধ শাখায় স্থানান্তরিত করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই দম্পতিকে সুরাট থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মুম্বাইয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। ‘ব্লিস কনসালট্যান্টস’ ফান্ডে অর্জিত সমস্ত টাকা বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। তাঁর এই পদক্ষেপকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক হেগড়ে। তাঁর বক্তব্য, অশেষ মেহতা এবং শিবাঙ্গী লাড মেহতা যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে। তারজন্য লুক আউট নোটিশ জারি করা উচিত।