নয়াদিল্লি, ৩১ জুলাই: চাকরি নেই দেশজুড়ে৷ বেকারের সংখ্যা বাড়ছে৷ সেই সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারেরই বিভিন্ন চাকরিতে শূন্যপদের সংখা বেড়ে ৮ লক্ষের উপর। এর মধ্যে রেলেই শূন্য পদের সংখ্যা ৩ লক্ষের বেশি। দীর্ঘ দিন ধরে কেন্দ্রের দফতরগুলিতে অনুমোদিত পদ শূন্য পড়ে থাকায় অনেক জায়গাতেই নামমাত্র মাইনেতে অস্থায়ী কর্মী দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। ফলে সরকারি চাকরিতে বেড়েছে চুক্তি শ্রমিকের সংখ্যা। আর এর জন্যই বছরের পর বছর নিয়োগ নেই৷ প্রধানমন্ত্রী মোদি ক্ষমতায় এসে প্রতিবছর ২ কোটি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শূন্যপদের যে ছবি দেখা যাচ্ছে, তাতে নতুন চাকরি বা কর্মসংস্থান দূরের কথা, সরকারি নিয়োগই কমে গিয়েছে।
শুক্রবার সংসদে এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানান, ২০২০-র ১ মার্চ পর্যন্ত কেন্দ্রে বিভিন্ন দফতরে মোট অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৪০ লক্ষ ৪ হাজার ৯৪১। বর্তমানে তাতে কর্মী সংখ্যা ৩১ লক্ষ ৩২ হাজার ৬৯৮ জন। শূন্যপদ ৮ লক্ষ ৭২ হাজার ২৪৩। রেলে মোট অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১৫ লক্ষ ৭ হাজার ৬০৪। কর্মীর সংখ্যা ১২ লক্ষ ৭০ হাজার ৩৯৯। শূন্যপদের সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ। অন্যদিকে ২৫৬টি চালু কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় কর্মী সংখ্যা ৯.২০ লক্ষ। কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা শূন্যপদের সংখ্যা জানতে চাওয়া হলেও তার জবাব দেওয়া হয়নি। নিয়োগ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাতেও শূন্যপদের সংখ্যা ৬০ হাজারের বেশি। এদিকে দু-চারটি বাদ দিয়ে বেশিরভাগ কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাই ঢালাও বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের। ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় চলছে অবসর প্রকল্পের নামে দেদার কর্মী সঙ্কোচন।
এদিকে শূন্যপদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে কেন্দ্রের সরকারি চাকরিতে নিয়োগের হার দ্রুত কমছে। মন্ত্রী সরকারি চাকরির নিয়োগ নিয়ে জানাচ্ছেন, কেন্দ্রে তিন নিয়োগ সংস্থা ইউপিএসসি, এসএসসি এবং আরআরবি৷ ২০১৬-১৭, ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ সাল নিয়ে পাঁচ বছরে তিন সংস্থায় নিয়োগের সংখ্যা জানানো হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, পাঁচ বছরে সব থেকে বেশি নিয়োগ কমেছে আরআরবিতে বা রেলে। তিন সংস্থায় পাঁচ বছরে ৪.৪৪ লক্ষ নিয়োগ হয়েছে মাত্র৷ শ্রমিক সংগঠনগুলির অভিযোগ, দেখা গিয়েছে দীর্ঘদিন নিয়োগ কম করে বা বন্ধ রেখে এক সময়ে সেসব শূন্যপদ তুলে দেওয়া হয়েছে। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরিতে নিয়োগ কমায় সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তফশিলি জাতি আদিবাসী ও অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের মানুষ। তাদের জন্য সংরক্ষিত পদে দীর্ঘদিন কোনও নিয়োগ না হওয়ায় সেসব পদ শূন্য পড়ে রয়েছে।