আবদুল ওদুদঃ একুশে জুলাই মানে আবেগ, একুশে জুলাই মানে মুক্তির সংগ্রাম। আর এই মুক্তির সংগ্রামের পথ দেখেছিলেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশে জুলাই নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রস্তুতি তুঙ্গে। গতকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা আসতে শুরু করছে কলকাতায়।
সদ্য অনুষ্ঠিত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ব্যাপক সাফল্য লাভ করেছে। আর ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি বার্তা দেন সেদিকেই তাকিয়ে আছেন রাজ্যের তৃণমূল কর্মীরা। পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেগকে কাজে লাগাতে তরুণ প্রজন্ম উৎফুল্ল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তরুণ প্রজন্মকে কি বার্তা দেন সেদিকেও তাকিয়ে থাকবেন তৃণমূল যুবরা। ২১ জুলাই বাংলার শাসকের জন্য বরাবরই খুব আবেগের। কারণ এই দিনটি তাদের জন্য শহিদ তর্পণের।
এই শহিদ তর্পনের মঞ্চে নচিকেতা এবং কবীর সুমনকে আমন্ত্রণ জানাল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রায় প্রত্যেক বছরই একুশে জুলাই-এর মঞ্চে দেখা যায় ‘পরিবর্তন চাই’য়ের গুরুত্বপূর্ণ মুখ দলের প্রাক্তন সাংসদ কবীর সুমনকে। তবে গত বছর তিনি অনুপস্থিত ছিলেন।
এবার তৃণমূল সূত্রে খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে তাঁকে ফোন করে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। যতদূর জানা যাচ্ছে,প্রবীণ গায়ক এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। তবে শারীরিক অসুস্থতার জন্য হয়তো উপস্থিত থাকবেন না। একইভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়û আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আরেক প্রতিবাদী গায়ক নচিকেতাকেও। গণ আন্দোলনের এই গায়ক একুশে জুলাই এর মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন।
প্রসঙ্গত, বাম আমল থেকেই প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসাবে বারবার প্রকাশ্যে এসেছে কবীর সুমনের নাম। সাংবাদিক, গায়ক, সুরকার গীতিকার এই শিল্পী বারংবার তার প্রতিবাদী ভূমিকার জন্য শিরোনামে এসেছেন। কানোরিয়া জুটমিলের শ্রমিক আন্দোলনে তাঁর যোগদান বাংলার রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলেছিল। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্বে মমতার আন্দোলন মঞ্চে বারংবার দেখা যেত তাঁকে।
পরবর্তীতে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে যাদবপুরের সাংসদ হয়েছিলেন তিনি। আবার একটা সময় দলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। তবে এরপরেও একুশের শহিদ তর্পনের মঞ্চে কবীর সুমন যথেষ্ট চেনা মুখ। একইভাবে চেনা মুখ নচিকেতাও। সরাসরি তৃণমূলের রাজনীতিতে যুক্ত না হলেও তৃণমূল ঘনিষ্ঠের তালিকায় অবশ্যই নচিকেতার নাম থাকবে। একুশের মঞ্চে তাঁকে বার বার দেখা গিয়েছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে অমন্ত্রণের বিষয়টি প্রত্যাশিতই ছিল। এই অবস্থায় তাঁদের শেষ পর্যন্ত দেখা যায় কিনা সেটাই এখন দেখার। যতদূর জানা যাচ্ছে, নচিকেতা নিজে জানিয়েছেন তিনি থাকবেন।
একুশে জুলাই-এর মঞ্চে উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ এবং জঙ্গলমহল থেকেও তৃণমূল কর্মীরা কলকাতায় আসতে শুরু করেছেন। কলকাতার বেশ কিছু স্টেডিয়াম যেমন কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, উত্তীর্ণ, সেন্ট্রাল পার্ক, হাওড়া স্টেডিয়াম, বড় বাজারের বেশ কিছু গেস্ট হাউস, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সমস্ত জায়গায় সংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস সহ তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা প্রতিনিয়ত পরিদর্শন করছেন। সুব্রত বক্সির নেতৃত্বে তৃণমূল কর্মীরা কাজ করে চলেছেন। একুশের যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে।