পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: জন নিরাপত্তা আইনের অধীনে এই বছর ২ জন সাংবাদিককে আটক করেছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই লোকসভায় এক বিবৃতি দিয়ে জানান, জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী মিডিয়া সংস্থাগুলির সঙ্গে যুক্ত দুজন ব্যক্তিকে জননিরাপত্তা আইনের অধীনে আটক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৩৭০ ও ৩৫-এ ধারায় ২০১৯ সালে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে দেওয়া হয়। সেই সময় বহু রাজনৈতিক নেতাদের বন্দি করা হয়। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, জম্মু-কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার পর সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত থাকা সদস্যদের গ্রেফতারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাজ্যসভায় এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এক লিখিত বিবৃতিতে জানান, চলতি বছরে জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত দুই ব্যক্তিকে জন নিরাপত্তা আইনের অধীনে আটক করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, শান্তি বজায় রাখার জন্য এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য ৫ আগস্ট, ২০১৯-এ সাংবিধানিক সংশোধনের পরে জম্মু ও কাশ্মীরে ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তবে ইন্টারনেট পরিষেবা আসতে আসতে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।তবে এই মুহূর্তে ইন্টারনেট পরিষেবার ওপরে কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করা নেই।
একটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে, দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি ক্ষতিকর কর্মকাণ্ডে জড়িত যে কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে (পেশাগত বা অন্য কোনও বৈষম্য ছাড়াই) আইনের আওতায় পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী রাই আরও জানিয়েছেন, জরুরি ভিত্তিতে ২০১৭ সালের টেলিকম পরিষেবাগুলির অস্থায়ী সাসপেনশনের অধীনে ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছিল। জম্মু-কাশ্মীরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সেটি আপলোড করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালের ৮ এপ্রিল জম্মু কাশ্মীর জনসুরক্ষা আইনে শিলমোহর দেন রাজ্যের তৎকালীন রাজ্যপাল। এ আইনকে প্রায়শই ড্রাকোনিয়ান আইন বলে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। শেখ আবদুল্লার সরকার এ আইন লাগু করেছিল। কাঠ চোরাই এবং চোরাকারবারিদের আটকাতে এই কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয়। এই আইনবলে ১৬ বছরের ঊর্ধ্বে কোনও ব্যক্তিকে বিনা বিচারে দুবছর পর্যন্ত আটকে রাখা যায়। তবে শুরু থেকেই এ আইনের ব্যাপক অপব্যবহার হয়েছে এবং ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতাসীন সরকার সর্বদাই রাজনৈতিক বিরোধীদের উপর এ আইন প্রয়োগ করে গিয়েছে। ২০১৬ সালে হিজবুল মুজাহিদিন কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর শয়ে শয়ে যুবকদের জনসুরক্ষা আইনে আটক হয়।তাদের আটকের সময়সীমাও বাড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের অগাস্ট মাসে এই আইন সংশোধন করা হয়। সংশোধনীর ফলে রাজ্যের বাইরেও কোনও ব্যক্তিকে এই আইনবলে আটক করা যেতে পারে।