পুবের কলম প্রতিবেদক: বাংলার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজতে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এই তথ্য জানিয়েছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। কলকাতায় বণিকসভা আইসিসি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি জানান যে, রাজ্য সরকার প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চলেছে বিদ্যুৎ সংবহন সংক্রান্ত ক্ষতি কমানো, স্মার্ট মিটার বসানো ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত উন্নতিসাধনের জন্য। সেই সঙ্গে বাড়ানো হবে উৎপাদনও। রাজ্যে এখন সাড়ে ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। কয়েক বছরের মধ্যে আরও ৪,১০০ মেগাওয়াট যোগ হবে।
২০২১-২২ অর্থবর্ষে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি সচল রাখার জন্য যে পরিমাণ কয়লার দরকার ছিল, রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে থাকা নিজস্ব কয়লা খনিগুলি থেকে তার ৭০ শতাংশ এসেছে। গত আর্থিক বছরে যে পরিমাণ কয়লা উৎপাদিত হয়েছে ওই খনিগুলি থেকে, তা মোট চাহিদার ৭৫ শতাংশ জোগান দিতে সক্ষম হয়েছে। দেউচা-পাঁচামিতে কয়লা উৎপাদন শুরু হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে কয়লার জোগানে রাজ্য সম্পূর্ণভাবে আত্মনির্ভর হতে পারবে বলে দাবি করেছেন অরূপবাবু।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন পর্ষদ যে সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে সেখানেই বিদ্যুতের পরিকাঠামো উন্নয়নে নজর দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। আর সেই কারণেই বিদ্যুৎ সংবহন সংক্রান্ত ক্ষতি কমানো, স্মার্ট মিটার বসানো ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত উন্নতিসাধনে ১১, ৮৯৫ কোটি টাকা খরচ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শুক্রবারের সভা থেকে অরূপবাবু দেশের অনান্য রাজ্যের তুলনায় বাংলার বিদ্যুৎ বন্টন ব্যবস্থা যে এগিয়ে আছে সেই তথ্যও তুলে ধরেন। তিনি জানান, দেশের প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করতে হয়। কিন্তু তারপরও বিদ্যুৎ বিপর্যয় এড়ানো যায় না। সেই তালিকা থেকে বাদ নেই প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজের রাজ্য গুজরাতও। কিন্তু এরাজ্যে সেই সমস্যা নেই। চলতি বছরেই ১৮ এপ্রিল রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। সেদিন সাড়ে ১১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় সরকার এ রাজ্যকে গ্রিন হাইড্রোজেন ও অ্যামোনিয়াম প্লান্ট তৈরির জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেচনা করেছে বলেও সভায় দাবি করেন অরূপবাবু। তিনি জানান যে, দুর্গাপুরে ডিপিএলের হাত ধরে হাইড্রোজেন প্লান্টের পাইলট প্রজেক্ট চালু হতে চলেছে।