পুবের কলম প্রতিবেদক:রোহিঙ্গারা পশ্চিম মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উত্তরাংশে বসবাসকারী একটি জনগোষ্ঠী। ধর্মের বিশ্বাসে এরা অধিকাংশই মুসলমান। রাখাইন রাজ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অধিবাসী হল রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গারা বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠীগুলোর একটি।
মায়ানমারের বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং সামরিক বাহিনীর গণহারে হত্যা, ধর্ষণ ও লুন্ঠনের শিকার হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে লাখ লাখ রোহিঙ্গা। লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে শরণার্থী হয়ে আশ্রয় নিয়েছে। অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোতেও তারা আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
দুই হাজার সতের সালে মায়ানমার থেকে যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি ব্যাপকভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু করে, তার ৫ বছর পূর্ণ হয়েছে।পাঁচ বছর পার হলেও রোহিঙ্গারা কবে মায়ানমারে ফিরে যাবে সে কথা কেউই বলতে পারছে না। এনিয়ে যে আলোচনা চলছিল সেটিও এখন থমকে গেছে বলেই মনে হচ্ছে।নিজ দেশে ফেরা অনিশ্চিত জেনেই অনেক রোহিঙ্গা নিজেদের ভাগ্য অন্বেষণে ব্যস্ত।বৈধভাবে কাজের সুযোগ না থাকলেও জীবনের তাগিদে রোহিঙ্গারা জীবিকা খুঁজে নিচ্ছেন।তারা ভেবেছিলেন হয়তো কয়েক মাস কিংবা বেশি হলে বছর খানেক হয়তো লাগতে পারে। কিন্তু এতোটা সময় পার হয়ে যাবে সেটা তারা ভাবতেই পারেননি।
“আমরা চলে যেতে চাই। কয় বছর লাগবে সেটা কিভাবে বলবো? যদি আল্লাহর হুকুম হয়, এবং বিভিন্ন রাষ্ট্র মিলে ওদের উপর চাপ দিয়ে সমস্যার সমাধান করে দেয়, তাহলে আমরা চলে যাব,” সাংবাদিকদের একথা বললেন নূর মোস্তফা নামের এক রোহিঙ্গা।এখন থেকে পাঁচ বছর আগে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দ্বারা হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ থেকে বাঁচতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয় প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা।এরপর থেকে তাদের মায়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য কয়েক দফা উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে।রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবার ব্যাপারে মায়ানমার সরকার কোনরকম সহযোগিতা করেনি।বাংলাদেশ-মায়ানমার ২০১৭ সালের শেষ নাগাদ প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে সাক্ষর করে। পরে রাষ্ট্রসংঘও সেই চুক্তিতে যুক্ত হয়েছিল।
সে চুক্তিতে বলা আছে রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ফেরত না গেলে তাদের জোর করে ফেরত পাঠানো যাবে না।রোহিঙ্গারা বলছেন যে পরিস্থিতিতে তারা পালিয়ে এসেছিলেন সে অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। সহসা প্রত্যাবাসন হচ্ছে না বলে অনেকেই ধরে নিয়েছে।