পুবের কলম প্রতিবেদকঃ প্রায় ৬০ জন ছাত্রীর স্নানের দৃশ্য মোবাইল ক্যামেরায় বন্দি করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক ছাত্রী। সেই ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে ভাইরাল হতেই হইচই। লজ্জা-অপমানে আট ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে খবর ছড়িয়ে ™ড়ে। শনিবার মধ্যরাতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্জাবের চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে। রবিবার এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তীব্র বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা।
রবিবার ভোর থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ছাত্রীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষ পর্যন্ত পুলিশ পৌঁছয় সেখানে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে উত্তেজনা আরও বাড়ে। কয়েক জন পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুরও চালায়। অভিযুক্ত মেয়েটির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩৫৪সি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত এমবিএ-র প্রথম বর্ষের ছাত্রী ।
পড়ুয়াদের রাতভর আন্দোলনের পর দায়ের এফআইআর। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। এরপরই মামলা নয়া মোড় নেয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই ছাত্রীর মোবাইল পরীক্ষা করে শুধু একটিই ভিডিয়ো পাওয়া গিয়েছে। যা ওই ছাত্রীর নিজের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিয়ো। যা সে তাঁর শিমলার বয়ফ্রেন্ডকে পাঠিয়েছিল। ওই ভিডিয়োয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস হয়েছে। এছাড়া আর কোনও ভিডিয়ো ওই মোবাইলে মেলেনি। একই বয়ান মোহালি পুলিশেরও ।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের ফোন থেকে একটিই ভিডিয়ো পাওয়া গিয়েছে। সেটি তাঁর নিজেরই। ভিডিয়োটি নিজের পুরুষ বন্ধুকে পাঠান তিনি। অভিযুক্তার মোবাইল ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান টুইটে লেখেন, ‘উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সবার কাছে আবেদন, গুজবে কান দেবেন না।’
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, তারা বিক্ষোভ থামানোর চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যেই পুলিশের তরফে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত এক ছাত্রীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। মোহালি পুলিশের প্রধান বিবেক সোনি জানিয়েছেন, ‘ভিডিয়োগুলি ভাইরাল হওয়ার পর বিক্ষোভ শুরু হলেও, কোনও মৃত্যু বা আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা সামনে আসেনি। এক ছাত্রী ভিডিয়োগুলি রেকর্ড করে তা সোশ্যাল মি়ডিয়ায় ভাইরাল করে । আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি শান্ত । এক অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। সবার কাছে আবেদন করছি, দয়া করে গুজব ছড়াবেন না।’
বিক্ষোভকারীদের একাংশের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়োগুলি ভাইরাল হতেই বেশ কয়েকজন ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। কিন্তু পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক জানান, ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়া সম্পর্কে জানতে পেরেই এক ছাত্রী অজ্ঞান হয়ে যায়। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, বর্তমানে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
পঞ্জাবের শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, এমন ন্যক্কারজনক ঘটনায় দোষীরা কড়া শাস্তি পাবে। বেশ কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে অভিযোগ ওঠে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুরো বিষয়টিকে ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই আবহে পুলিশ মামলার তদন্ত শুরু করেছে। এদিকে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আরও একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। সেখানে এক ছাত্রীকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে তিনি এই স্নানের ভিডিয়ো প্রকাশ করেছেন। এর জন্য তিনি ক্ষমা চান