পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: গোমূত্র ছিটিয়ে-তিলক পরিয়ে তবেই এন্ট্রি। গরবা অনুষ্ঠানে মুসলিম প্রবেশ রুখতে নয়া ‘বিধান’ গুজরাতে। অতীতে এই চিত্রটি এমন ছিল না। সকল ধর্মের মানুষই সম্মিলিত ভাবে এই অনুষ্ঠানে সামিল হত। কেউ বা বন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে কেউ বা প্রতিবেশির উৎসবে সামিল হতে সেখানে যেত। কিন্তু ২০১৪-এর পর থেকে এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আমুল পরিবর্তন হয়, লাগে রাজনীতির ছোঁয়া। অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে মানুষদের মনে ধর্ম-বিদ্বেষ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। বলা হয় গো-ভক্ষণকারীরা এই অনুষ্ঠানে এলে ‘মা’-এর অপমান হবে। তারপর থেকেই গরবা নাচের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মুসলিম-সহ অন্য ধর্মের মানুষরা প্রবেশ করা নিয়ে প্রতিবছরই আপত্তি ওঠে। যা নিয়ে তুমুল বিতর্কও হয়। এবার সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানে অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে নয়া নিদান দিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। যার জেরে ফের একবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু মোদি ঘনিষ্ঠ বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।
ঘটনাপ্রসঙ্গে, ভিএইচপি সভাপতি হিতেন্দ্রসিংহ রাজপুত জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের ধর্ম নির্ধারণ করতে তাঁদের গায়ে গোমূত্র ছেটানো ও ধর্মীয় তিলকের নীতি মানলে খুব সহজেই কে হিন্দু, কে মুসলিম পরিচয় পাওয়া যাবে। সেই সময় যদি কেউ গোমূত্র ছেটানোতে আপত্তি বা তিলক পরতে রাজি না থাকেন তাহলেই তিনি কোন জাতের তা জানা ও জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে।
উল্লেখ্য, ‘গরবা’-র অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে পারবে না কোনও অহিন্দু। তাই সেখানে ঢোকার আগে সবার কপালেই পরানো হবে ধর্মীয় তিলক। সেই সঙ্গে গায়ে ছিটানো হবে গোমূত্র। রবিবার এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা লাগানো একটি বোর্ডের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। তারপর থেকে শুরু হয়েছে বিতর্কও।
শুধু তাই নয়, গরবার অনুষ্ঠানকে কেউ লাভ জেহাদের জায়গায় যাতে পরিণত না করতে পারে তা নিশ্চিত করতে গুজরাত সরকারকে এক-প্রকার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠন প্রধান। এছাড়া, কোনও মুসলিম যাতে নবরাত্রির অনুষ্ঠানের ধারে কাছে ঘেঁষতে না পারে সেটা নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছে তারা।
পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরেন্দ্র জৈন জানান, ‘উৎসবের আয়োজকদের উচিত অংশগ্রহণকারীদের শংসাপত্র যাচাই করার জন্য আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করা।
তবে একাংশের মতে, এই ছবি একেবারেই বাংলার বিপরীত। বাংলার পুজোর আয়োজনে অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোকজনও উপস্থিত হন। এমনকী আয়োজনেও তাঁদের ভূমিকাও থাকে। এটাই বাংলার সম্প্রীতি। এই সম্প্রীতির জন্যই বাংলা অনন্য।