দেবশ্রী মজুমদার, বোলপুরঃ ছাত্র আন্দোলনে জেরে ফের উত্তাল শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাস খোলা, রেজাল্ট বের করা– স্কলারশিপ চালু করা সহ বারো দফা দাবিতে নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে ধুন্ধুমার কাণ্ড পড়ুয়াদের। শুক্রবার সকালের দিকে সেন্ট্রাল অফিসের সামনে উপাচার্যের সঙ্গে পড়ুয়ারা কথা বলতে গেলে নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের আটকে দেয়। বিক্ষোভ দেখেই উপাচার্য নিজেও কোনও কথা না বলে অফিসে ঢুকে যান। এরপর দুপুরের দিকে মাইক নিয়ে বলাকা গেট দিয়ে ছাত্রছাত্রী ঐক্যের পড়ুয়ারা ঢুকতে গেল ফের আরেক দফা তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। ঘটনার জেরে পড়ুয়াদের হাত কেটে যায়।
ছাত্রছাত্রী ঐক্যের তরফে সোমনাথ সৌ বলেন– আমরা আগেই নিজস্ব দাবি দাওয়া নিয়ে উপাচার্যকে মেইল করি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্তমান উপাচার্য শান্তিনিকেতনের উপযুক্ত নন। উনি এখান থেকে চলে গেলে সবার মঙ্গল। যেহেতু শান্তি নিকেতনে কোনও পাগলা গারদ নেই, বর্তমান উপাচার্যর উচিৎ যেখানে পাগলা গারদ আছে– সেখানেই যাওয়া।
এদিকে– গত ২৬ জানুয়ারি শান্তিনিকেতনে প্রজাতন্ত্র দিবসের এক অনুষ্ঠানে ভাষণে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর এক বিতর্কিত বক্তব্যের ভাইরাল ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে চাঞ্চল্য ছড়ায়। যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি প্রতিবেদক।
বিশ্বভারতী নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একাংশকেও তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। এমনকি সম্ভব হলে সেই সব অধ্যাপকরা যেন ‘পড়াতে না পারেন’ তার ব্যবস্থাও করতে পারেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
উত্তরাখণ্ডের রামগড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি বাড়ি আছে। সেই বাড়ির আশপাশে ৪৬ একর জমি উত্তরাখণ্ড সরকার বিশ্বভারতীকে দিয়েছে তাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির জন্য।
সেই প্রসঙ্গ টেনে তাঁর ভাষণে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বলেন– ভারতে প্রথম কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরি হচ্ছে। এটা নিয়ে অনেক সমালোচনা হচ্ছে। এরপরই উপাচার্য বিশ্বভারতী নিযেü আবারও বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেন– যেমন এখানে ‘বিশ্বভারতী এখন পশ্চিমবঙ্গ ভারতী বা বোলপুর ভারতী হয়ে গিয়েছে’।
ঠাকুর পরিবারের সদস্য প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিযü ঠাকুর বলেন– উপাচার্য বিশ্বভারতী মানের উন্নতির ক্ষেত্রে কি পদক্ষেপ নিযেüছেন উনি? শুধু সমালোচনা করলে চলে না। উনি সর্বদা সমালোচনা করেন। উনি ছাড়া আর সকলেই খারাপ। এই বিষযেü আমার আর কি বলার থাকতে পারে?
বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও উপাচার্যের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন– ‘নাচতে না জানলে উঠন বাঁকা… একটা পাগল উপাচার্য’। কোনও বিশ্ববিদ্যালযü নিযেü কোনও উপাচার্য এমন কথা বলতে পারেন? ওনার চলে যাওয়া উচিৎ।